মালয়েশিয়ায় দুই বাংলাদেশী কর্মীকে হত্যা ও একজনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ফাঁসির আসামি অলিয়ার শেখকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন দেশটির আদালত।
বুধবার মালয়েশিয়ার সর্বোচ্চ আদালত ফেডারেল কোর্ট-এর পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট বেঞ্চ দীর্ঘ শুনানীর পর এ আদেশ দেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবি ছিলেন এস ভাসাগারাজান।
কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন সাজাপ্রাপ্ত আসামি প্রবাসী কর্মী অলিয়ার শেখকে জেলখানায় দীর্ঘ ৮ বছর আইনী সহায়তা দিয়েছে। বিনাবিচারে আট বছর কারাভোগের পর আদালতের মাধ্যমে থেকে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অলিয়ার শেখ।
মুক্তি পাওয়ার পর অলিয়ার শেখকে বুধবার তাৎক্ষণিকভাবে হাই কমিশনে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে হাইকমিশনের তত্বাবধানে রাখা হয়েছে। আউট পাসের মাধ্যমে তাকে শিগগিরই তাকে দেশে পাঠানো হবে।
এদিকে তার মুক্তির খবর গ্রামের বাড়ি ছাগলছিরা গ্রামে পৌঁছলে মা-বাবা ও ভাই-বোনদের মাঝে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। তার বাবা আওয়াল শেখ ছেলে অলিয়ার শেখকে দ্রুত দেশে ফিরে পেতে হাই কমিশনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের হাই কমিশনার মো. শহিদুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা মালয়েশিয়ার আদালতের সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ বিচারপতিগণ ও দেশটির সরকারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে হাই কমিশনার শহিদুল ইসলাম বলেন, হাইকমিশনে প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মীরা এসে যাতে কোনো হয়রানির শিকার না হয় তার জন্য সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে গোপালগঞ্জ জেলার মোকছেদপুর থানার ছাগলছিরা গ্রামের আওয়াল শেখ ঋণ ও ভিটেমাটি বিক্রি করে কলিং ভিসায় বড় ছেলে অলিয়ার শেখকে কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে মালয়েশিয়ায় পাঠায়। ঋণের টাকা এখনও পরিশোধ করতে পারেনি আওয়াল শেখ।
মালয়েশিয়ার সেরাম্বান জেলার একটি পোল্ট্রি ফার্মে যোগদান করেন প্রবাসী অলিয়ার শেখ। হঠাৎ একদিন রাতে ওই ফার্মে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা কাদের ও শাহীন নামের দুই বাংলাদেশীকে হত্যা করে। আরেক বাংলাদেশী হেলালকে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়।
মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য দেখে তা মালিক পক্ষকে জানাতে গেলে মালিক পক্ষ উল্টো অলিকয়ারকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। মালয়েশিয়ার নিগরি সেম্বিলান হাইকোর্ট ২০১২ সালে ৩০৭ ও ৩০২ ধারা মোতাবেক অলিয়ার শেখকে ১০ বছরের জেলসহ ফাঁসির আদেশ দেন।