মুন্সিগঞ্জ, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ডেস্ক (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা সেতু হচ্ছে। তাই সম্ভাব্যতা সমীক্ষা নিয়ে সদর উপজেলা ও গজারিয়া উপজেলায় সোমবার মতবিনিময় হয়েছে।
মুন্সিগঞ্জ জেলার একটি বিচ্ছিন্ন উপজেলা গজারিয়া। নদী বেষ্টনীর কারণে উপজেলা থেকে জেলা সদরের সহজতর যোগাযোগের মাধ্যম মেঘনা নদী। আর নদী পারাপারে ব্যবহৃত হয় একমাত্র নৌযান ট্রলার। ঝড়-বৃষ্টি এবং উত্তাল মেঘনা ঢেউ উপেক্ষা করে প্রায় ৭৫ বছর যাবৎ যাতায়াত করে আসছে উভয় পারের মানুষ। এই উপজেলার প্রায় দুই লাখ মানুষের দাবি একটি ব্রিজ। আর এই দাবি পূরণের প্রস্তুতি চলমান রয়েছে।
ইতোমধ্যে মুন্সিগঞ্জ ও গজারিয়া অংশে মেঘনা নদীতে ব্রিজ তৈরির জন্য মাটি পরীক্ষার কাজ শেষে প্রকল্পটির সমীক্ষা কাজ চলছে। প্রকল্পের এলাইনমেন্ট ঠিক করে শুরু হয়েছে মানুষকে অবহিত করার কাজ। ২০২৪ সালের জুন মাসে শেষ হবে সমীক্ষার কাজ।
পরে অর্থ বাজেটের পর করা হবে ডিপিপি প্রণয়ন করা, কন্ট্রাকটর, কনসাল্টেন্ট নিয়োগসহ আনুষঙ্গিক কাজ।
গতকাল সোমবার সকাল ১০ টায় সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে গজারিয়া-মুন্সিগঞ্জ সড়কে মেঘনা নদীর উপর সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা কাজের ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন প্রভাব নিরুপণ সম্পর্কিত এক মতবিনিময় সভা হয়।
মেঘনার দুই পারেই মতবিনিময়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফিফা খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদাউস।
প্রকল্পের সমীক্ষা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনিছুজ্জামান আনিছ, প্রকল্প পরিচালক মো. লিয়াকত আলী, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এস কে ব্যানার্জী, সমাজ বিশেষজ্ঞ মো. মঞ্জুর, সামাজিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ড. সুরেশ কউল, মহাসড়ক বিশেষজ্ঞ মো. রাকিব, পরামর্শক প্রতিনিধি মি. কারলিওস, রামপাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাচ্চু শেখ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াশিম আলী।
বর্তমানে মুন্সিগঞ্জ জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করতে হলে উত্তাল মেঘনা নদী কিংবা নারায়ণগঞ্জ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কযোগে ৭০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে যাতায়াত করতে হয় গজারিয়াবাসীর। যেখানে ২ কিলোমিটারের একটি ব্রীজ হলেই কয়েক মিনিটের ব্যবধানে নির্ভয়ে পারাপার হওয়া যায় উভয় প্রান্তে।
এই ব্রিজ নির্মিত হলে শুধু মুন্সিগঞ্জই নয় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যানবাহন ও জনসাধারণও এই পথে ভবেরচর হয়ে চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাতায়াত করতে পারবে। এতে খুব সহজেই যাত্রীবাহী যানবাহনসহ পণ্যবাহী গাড়ি অতি সহজেই দক্ষিণাঞ্চল থেকে কুমিল্লা, লাকসাম, ফেনি, বি.বাড়িয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবানসহ ত্রিপুরা, আসাম ও মায়ানমার যাতায়াত করতে পারবে। এতে অর্থনৈতিকভাবে দেশের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ অঞ্চলগুলো স্বাবলম্বী হবে।
ব্রিজ হবে ক্যাবেল স্টেইড
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. সমর কুমার ব্যানার্জি জানিয়েছেন, বিবিএ যে ব্রিজ করবে তাতে পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করেই বাংলাদেশে সব ব্রিজ হবে।
মেঘনা নদীর উপরে দুই কিলোমিটারের বেশি একটি ব্রিজের সাথে আরো কিছু ছোট ব্রিজ আছে। এই ব্রিজ যখন কনস্ট্রাকশন হবে তখন পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না। পরিবেশ সংক্রান্ত
বিধিমালা আছে বাংলাদেশে। সেই বিধিমালাকে অনুসরণ করা হবে। এবং সেই বিধিমালা অনুসারে এই প্রজেক্ট কিন্তু রেড ক্যাটাগরির হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে যে ছাড়পত্র দরকার হবে
সেটা নেওয়া হবে। সোমবার সকাল ১০টায় সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মতবিনিময়
সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মেঘনা নদীর উপর ক্যাবল স্টেইড ব্রিজ প্রস্তাবনা করেছি। ক্যাবল স্টেইড ব্রিজ
হলে কি হবে মেইন নদীর উপর পিয়ারের সংখ্যা কম হবে। পিয়ারের সংখ্যা যখন কম হবে নদীর যে ইকো সিস্টেম তার উপর ইমপ্যাক্ট কম হবে। পিয়ার করতে হলে পাইলিংয়ের প্রয়োজন হয়। পাইলিংয়ে যে ক্যামিকেলব্যবহার করবো তাতে পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না।