৪ মে, ২০২০, (আমার বিক্রমপুর)
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখতে ক্ষুদ্র শিল্প, হাট–বাজার চালু করা হচ্ছে। ঈদের আগে কেনাকাটা করার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। তবে সুরক্ষা ও মানুষের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখতে হবে। এ ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নির্দেশনা আসবে।
আজ সোমবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রংপুর বিভাগের আটটি জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। করোনাভাইরাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের আটটি বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাদা ভিডিও করনফারেন্সে কথা বলেছেন। আজ রংপুরই ছিল শেষ বিভাগ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রোজার মাস উপলক্ষ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে কিছু জিনিস উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেখানে সবাইকে নিজেকে ও অপরকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। ১৫ মে পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান। তিনি আরও বলেন, ‘রোজার মাসে যাতে কেনাবেচা চলতে পারে তাঁর জন্য দোকানপাট খোলা, বাজার–হাট চালু রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলায় জেলাভিত্তিক ক্ষুদ্র শিল্প চালানো যাবে। অর্থনীতির চাকা যাতে গতিশীল থাকে, সেখানে মানুষকে সুরক্ষিত রেখে, মানুষের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে, সেগুলো যেন পরিচালিত হতে পারে।
এ ব্যাপারে বেশ কিছু নির্দেশনা মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে ঘোষণা দেওয়া হবে। সরকারি অফিস আদালত সব সীমিত করে চালু করে দিচ্ছি। সামনে ঈদ, তাঁর আগে কেনাকাটা বা যা যা দরকার সেগুলোও যেন মানুষ করতে পারে। কিন্তু এখানে মনে রাখতে হবে, সেখানে জনসমাগম থেকে মুক্ত থাকতে হবে। সেখানে কিন্তু সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে গেছে।’
করোনাভাইরাসের শক্তি অনেক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের মতো এক অদৃশ্য শক্তির কাছে ধন সম্পদ অর্থ কোনো কিছুই কাজে লাগছে না।
চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ প্রসঙ্গে বলেন, খুব শিগগিরই নির্বাচিত ৫ হাজার ৫৪ জন নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে। যাদের করোনাভাইরাসের চিকিৎসার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীসহ নিজ দলের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে কয়েকজন পুলিশ মারা গেছেন। তাঁদের পরিবাররে প্রতি সমবেদনা জানান। অনেকের কবর খুঁড়তেও পুলিশ সহযোগিতা করছে বলে উল্লেখ করেন। এ ছাড়া যারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সবাইকে ধন্যবাদ দেন। কয়েকজন মিডিয়াকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, তারা নিজেদের সুরক্ষিত রাখবেন।
ব্যবসার জন্য যারা ঋণ নিয়েছেন তাদের দুইমাসের সুদ স্থগিত করা হয়েছে। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজে কথা বলছেন বলে জানান। প্রধানমন্ত্রী জানান, ১০ টাকায় চাল কেনার জন্য আরও ৫০ লাখ রেশন কার্ড সুবিধা দেওয়া হবে। যাদের আয়- উপার্জনের পথ নেই তাঁদের ঈদের আগে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী আবারও কৃষির ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘এবার ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হবে। আশা করি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে খাবারের সমস্যা হবে না।’
রংপুর বিভাগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি রংপুরকে বিশেষভাবে বলে রাখছি, যেহেতু এটা মঙ্গাপীড়িত এলাকা ছিল। যারা একটু স্বচ্ছল, প্রশাসন বা আমাদের নেতাকর্মী যারা আছেন, সকলকে অনুরোধ করব, এই এলাকায় যেন আবার মঙ্গা ফিরে না আসে। সে জন্য বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। সেখানে কোনো দুস্থ লোক থাকলে তাঁদের সাহায্য করতে হবে। আমাদের যথেষ্ট পরিমাণে খাদ্য মজুত আছে। কোনো মানুষ যেন না খেয়ে কষ্ট না পায়। আর মধ্যবিত্ত। নিম্নবিত্তদের মধ্যে যারা হাত পাততে পারছে না তাঁদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছি। সেই সাথে দেখবেন রংপুরে যেন আবারও মঙ্গায় পড়ে না যায়। হবে না ইনশাল্লাহ। যা দরকার আমরা সে ব্যবস্থা