২৩শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রবিবার | সকাল ৬:৩৩
গজারিয়া গণহত্যা দিবস আজ
খবরটি শেয়ার করুন:

আজ ৯ মে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়াবাসীর জন্য এক শোকাবহ দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গজারিয়ার ইসমানিরচর, গোসাইরচরসহ ১০ গ্রামের প্রায় সাড়ে তিন শ নিরপরাধ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশের যেসব অঞ্চলে গণহত্যা সংঘটিত হয়, এর মধ্যে গজারিয়া গণহত্যা অন্যতম। সেই থেকে গজারিয়াবাসী এই দিনটিকে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করে আসছেন।

১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনী নারী ও শিশুসহ ৩শ’ ৬০ নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করে। মুন্সিগঞ্জ জেলার মেঘনা ও মেঘনার শাখা নদী ফুলদী তীরের গোসাইরচর, নয়নগর, বালুরচর, বাঁশগাঁও জেলেপাড়া, ফুলদী, নাগের চর, কলসেরকান্দি, দড়িকান্দি ও গজারিয়া গ্রামে এ দিনটিতে কান্নার রোল পড়ে যায়।

গজারিয়া উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের এ গ্রামগুলোতে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ চালায় ঘাতকরা। তখন নির্মমতার স্বীকার শহীদদের দাফন করার লোকও পাওয়া যায়নি গ্রামগুলোতে। তাই বাধ্য হয়ে গণকবর দেয়া হয়।

রাজধানী ঢাকার মাত্র ৩৮ কিলোমিটার অদূরে সেই বধ্যভূমিগুলো আজও যথাযথভাবে সংরক্ষিত হয়নি।

সে দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ৮০ বছর বয়স্ক রফিজ উদ্দিন বলেন, ‘১৯৭১ সালের ৯ মে ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে নীরব নিস্তদ্ধ রাতের মৌনতা শেষে ডাহুক ডাকা ভোরের আগে মুয়াজ্জিম যখন সুউচ্চ মিনারে আযান দিচ্ছিলেন, সেই মুহুর্তেই বর্বর এ হামলা হয়। আবুল হোসেন জলিল শিকদার ও আলমাজ দর্জিসহ ১৫ জনকে ধরে নিয়ে পাকিবাহিনী পল্টন সড়কের পাশে সারিবদ্ধ দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। ১৩ জন মারা গেলেও ভাগ্যক্রমে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বেঁচে যান আবুল হোসেন জলিল শিকদার ও আলমাস দর্জি।

গোসাইরচর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জানান, এই গণহত্যার আগে গজারিয়া হাই স্কুলে ৫৪ মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে একটি সভা হয়। এ খবর শুনেই গজারিয়া গ্রামের রাজাকার খোকা চৌধুরী, সাম চৌধুরী ও গফুর চৌধুরী পাক বাহিনীকে নিয়ে আসে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঘর চিনিয়ে দেয় ফালু নামের এক রাজাকার। পাকবাহিনী আব্দুল খালেক আলোর আপন ভাই মোয়াজ্জেমসহ পরিবারের সাত জনকে হত্যা করে। শহীদ পরিবারের সদস্যরা আছেন নানা দুঃখ কষ্টে। আজ পর্যন্ত তাদের জন্য কেউ কোন কিছু করেনি বলে অভিযোগ তাদের।

 

error: দুঃখিত!