মুন্সিগঞ্জ ১ জুলাই ২০২০, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবির ঘটনায় ১৩ ঘন্টা পর জীবিত উদ্ধার হওয়া মুন্সিগঞ্জের সুমন বেপারী চিকিৎসা শেষে গতকাল মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলার আব্দুল্লাপুরে তার বাড়িতে ফিরেছেন।
আজ দিনব্যাপী তার বাড়িতে ছিলো তাকে ঘিড়ে নানা আয়োজন। সকাল থেকেই দূর-দুরান্তের স্বজনরা নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফেরা সুমনকে দেখতে বাড়িতে ভিড় করেন। দুপুরের পরে সুমনের জন্য স্থানীয় মসজিদে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়।
সুমনের এই অলৌকিক বেঁচে ফেরা নিয়ে সারাদেশে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হলেও জীবিত অবস্থায় বাড়ি ফেরায় স্বজন ও এলাকাবাসীর মাঝে ফিরেছে স্বস্তি।
সাধারণের কাছে অলৌকিকতা বা বিজ্ঞান যাই হোক না কেন সুমনের মা আমেনা বেগম (৭০) ভেবেছিলেন হয়তো ছেলের লাশই আর কখনো খুজে পাবেন না। সেখানে সুমন বেপারী জীবিত ফিরে এসেছেন সেটাই এখন তার কাছে বড় পাওযা।
তিনি আজ দুপুরে ‘আমার বিক্রমপুর’ কে বলছিলেন, ‘সকালে ফজরের নামায পরে বাসা থেকে বের হয়ে ঢাকা গেছে সুমন। ১০ টার দিকে খবর পাইলাম লঞ্চ ডুইব্যা গেছে। এরপর ভাবলাম আমার ছেলে বুঝি আর নাই। সারাদিন কানতে কানতে গেলো। রাতে খবর শুনলাম সুমনেরে পাওয়া গেছে। শোনার পরে আরও কানলাম। আল্লাহয়ই আমার সুমনরে ফিরায়া দিয়া গেছে।’
সুমনের একমাত্র বোন পারুল আক্তার পুতুল বলেন, ‘আল্লার অশেষ রহমত। আমার ভাইয়েরে আমগো কাছে ফেরত দিছে। আমরা তো একসময় আশাই ছাইরা দিছিলাম। সবারে পাওয়া যাইতাছে আমার ভাইয়ের কোন খবর নাই। এরপরে আল্লায় আমার ভায়েরে ফিরায়া দিছে। আপনারা সবাই দোয়া করবেন আল্লায় যাতে আমার ভাইয়েরে বরকত দেয়’
সুমন বেপারীর প্রতিবেশী স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষক মোহাম্মদ জাহিদ বলেন, ‘সুমন মামা আমার সাথে চলাফেরা করেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। ঘটনার আগেরদিনও উনি আমার সাথে ছিলেন। ঘটনার দিনও উনি আমার সাথে ফজর নামাজ পরে গেছেন। উনি অনেক আল্লাহ্ ওয়ালা লোক। যারা উনার কথা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন তারা হয়তো বিশ্বাস করতে পারছেন না। তবে বড় কথা এটাই যে উনি জীবিত আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন।’
বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবির ঘটনায় ১৩ ঘন্টা পর জীবিত উদ্ধার হওয়া সুমন বেপারী বলেন, ‘হাসপাতালে যখন ছিলাম সাংবাদিকরা এক কথারে ১০০ বার প্রশ্ন করছে। এখনও অনেকজন অনেক প্রশ্ন করতাছে। সবচেয়ে বড় কথা হইলো আমার মায়ের দোয়া আমাকে বাঁচাইছে। বাবা নাই, মা’কে আবার দেখতে পাইতেছি এটাই সত্যিকারের বড় পাওয়া। আল্লার কাছে আমার লাখো-কোটি শোকরিয়া।
এদিকে সুমন বেপারী জানিয়েছেন তিনি শঙ্কামুক্ত হলেও পুরোপুরি সুস্থ নন। তবে আপাদত স্থানীয়ভাবেই চিকিৎসা নিয়ে পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে চান।