২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | রাত ২:৩৬
৪০ বছর বয়সে ‘ষ্টুডেন্ট ভিসা’য় মালয়েশিয়ায়; হারালেন ‘পা’, হারিয়েছেন স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা
খবরটি শেয়ার করুন:

২১জুলাই ২০১৮, আমার বিক্রমপুর
শিহাব আহমেদঃ স্থানীয় দালালের খপ্পরে পড়ে নিজের বয়স লুকিয়ে ষ্টুডেন্ট না হওয়া সত্বেও নিজেকে ষ্টুডেন্ট বানিয়ে প্রতারণার সকল ধাপ পেরিয়ে স্বপ্নের পসরা সাজিয়ে গিয়েছিলেন মালয়েশিয়ায়। ফিরেছেন নিজের একটি পা ও স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে।

মুন্সিগঞ্জের পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামের আবুল হোসেন ২০১১ সালে তথাকথিত ‘ষ্টুডেন্ট ভিসা’য় মালয়েশিয়ায় যান। স্থানীয় যে দালালের মাধ্যমে তিনি তখন এই প্রতারণার ফাদে পা দিয়েছিলেন তাকে প্রায় ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দিতে হয়েছিলো আবুল হোসেন কে। আর এই টাকার পুরোটাই তিনি জোগাড় করেছিলেন নিজের বাড়ি বিক্রি করে।

মালয়েশিয়ায় ‘ষ্টুডেন্ট ভিসা’য় ঢুকলেও তার মূল উদ্দেশ্য ছিলো যে কোন ভাবে হোক কাজ করে দেশে টাকা পাঠানো। ৬ মাস পরে মালয়েশিয়ার ÔKANZEN TETSU SDN BHDÕ নামক একটি কোম্পানিতে কাজও পেয়ে যান তিনি। সেই কোম্পানিতে প্রায় ৩ বছর কাজ করে ভালোই ছিলেন আবুল হোসেন। প্রতি মাসে ১০-১৩ হাজার টাকা পর্যন্ত দেশেও পাঠাতেন তিনি।

এরপর হঠাৎ একদিন কাজ করার সময় ৩টন ওজনের পাইপ পায়ের উপরে পড়ে পা ভেঙে যায় আবুল হোসেনের। এই অবস্থা নিয়েই ২০১৫ সালে বাংলাদেশে ফেরৎ আসেন তিনি।

দেশে আসার পরে পুরো পা কেটে ফেলতে হয় আবুল হোসেনের। বর্তমানে তিনি হারিয়ে ফেলেছেন স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা। দালালের খপ্পরে পরে প্রতারণা করে বিদেশ গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন ্মি. হোসেন।

তিনি বর্তমানে তরুণদের মধ্যে ‘ষ্টুডেন্ট ভিসা’য় বিভিন্ন দেশে কাজ করতে যাওয়ার যে প্রবণতা রয়েছে সেটিকে নিরুৎসাহিত করেছেন।

স্থানীয় একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বলছেন, মুন্সিগঞ্জে মাধ্যমিক স্তর পাশ করার পরেই এইরকম ‘ষ্টুডেন্ট ভিসা’য় বিদেশে কাজ করতে যাওয়ার বিষয়টা তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। এসময় থেকেই তারা এ বিষয়ে খোজ রাখতে শুরু করে। এরপরে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে এসেই বিভিন্ন অযুহাতে জীবনের চরম ঝুকি নিয়ে ‘ষ্টুডেন্ট ভিসা’য় বিদেশে কাজ করতে চলে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ১-২ বছরের মধ্যে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে দেশে ফিরে এসেছেন।

জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারি পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলছেন, মুন্সিগঞ্জে ‘ষ্টুডেন্ট ভিসা’য় বিদেশে কাজ করতে গিয়ে ক্ষতির শীকার হওয়া ঘটনা অনেক। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় সামাজিক অবস্থানের কারনে তারা এ বিষয়টি বাইরে প্রকাশ করতেও চান না।

error: দুঃখিত!