কেন্দ্র দখল, হামলা, ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও অগ্নিসংযোগসহ নানা বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে আনুষ্ঠানিক সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছে বিএনপির ৪ প্রার্থীসহ পাঁচ জন।
মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ১০টি ইউনিয়নের ৯৪ টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই উৎসব মুখর পরিবেশ সহিংসতায় রূপ নেয়।
সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার রশুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইকবাল হোসেন চোকদারের লোকজন বিএনপি প্রার্থী আব্দুল খালেক সিকদারের উপর হামলা চালিয়ে তাকে রক্তাক্ত জখম করে। অপরদিকে বালুরচর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের খাসমহল বালুচর কেন্দ্রে বেলা ১২টার দিকে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ৩ পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।
বিকাল ৩টার দিকে একই ইউনিয়নের খাসমোহল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ৫টি বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় আহত হয় অন্তত ২৫ জন।
এদিকে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে বিকাল ৩টায় সিরাজদিখান বাজার সমবায় মার্কেটের সাংবাদিকদের কন্ট্রোল রুমে আনুষ্ঠানিক সাংবাদিক সম্মেলন করেন সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপি সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস ধীরেন। এ সময় তিনি সরকার দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করেন। এ কারণে বিএনপির বালুরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিন উদ্দিন চৌধুরী, বয়রাগাদী ইউনিয়নের মাহমুদুর রহমান, মধ্যপাড়া ইউনিয়নের আজিম আল রাজি, মালখানগর ইউনিয়নের আজিজুল হক খানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি। এছাড়া মালখানগর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমা বেগমও নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
মুন্সীগঞ্জের সহকারি পুলিশ সুপার (লৌহজং সার্কেল) সামছুজ্জামান বাবু সাংবাদিকদের জানান, ‘বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। তবে কয়েকটি কেন্দ্রে সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন তা কঠোরহস্তে দমন করেছে। বয়রাগাদী ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবরদি কেন্দ্রে সংঘর্ষে ১ জন আহত হয়। তাছাড়া প্রায় সব কেন্দ্রই দখল হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।’
উল্লেখ্য, সিরাজদিখান উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩৫ জন, সাধারণ সদস্য পদে ১৮৯ জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৩৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। ১০টি ইউনিয়নের ৯৪টি কেন্দ্রের ৩৭৩টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। এসব ইউনিয়নে এক লাখ ৪৮ হাজার ৮১০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন।
আর বেসরকারী ভাবে ,নির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, বাসাইল ইউপিতে সাইফুল ইসলাম যুবরাজ, রশুনিয়া ইউপিতে ইকবাল হোসেন চোকদার, কোলা ইউপিতে মীর লিয়াকত আলী, জৈনসার ইউপিতে রফিকুল ইসলাম দুদু, মধ্যপাড়া ইউপিতে হাজী করিম মিয়া, মালখানগর ইউপিতে সানজিদা আক্তার, লতব্দি ইউপিতে এস এম সোহরাব, বালুরচর ইউপিতে আবু বক্কর সিদ্দিক, বয়রাগাদি ইউপিতে গাজী আলাউদ্দিন ও ইছাপুরা ইউপিতে মতিন হাওলাদার।