২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সোমবার | সন্ধ্যা ৬:৫৭
শিক্ষকদের কাছে অর্থমন্ত্রীর দুঃখপ্রকাশ
খবরটি শেয়ার করুন:

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, ‘আমি যেভাবে বক্তব্যটি দিই তাতে অবশ্যই তাঁদের (শিক্ষকদের) মানহানি হয়েছে। কারণ জ্ঞানের অভাবে বলা এবং যথাযথ তথ্য সম্পর্কে অনবহিত বলার মধ্যে যথেষ্ট তফাৎ রয়েছে। আমি আমার বক্তব্য সম্পর্কে খুবই দুঃখিত।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে যে আন্দোলনে নেমেছেন সে বিষয়ে কথা বলতে আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দুঃখ প্রকাশ করেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সিলেট সার্কিট হাউসে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা জগতে বেশ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে আমারই একটি বক্তব্য নিয়ে। আমার মনে হয় এই বিষয়টির নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করেন। আমি তাঁদের বলি যে, এ বিষয়ে কেবিনেট সচিব স্বাভাবিক নিয়মে বিবৃতি দেবেন এবং সরকারি নির্দেশনা জারি হবে। বিষয়টি জটিল ও ব্যাপক তাই সে সম্বন্ধে বেশি বলা যাবে না।
‘শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি কমিশনের সুপারিশবিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে সাংবাদিকেরা আমার মন্তব্য চান। তখন আমি বলি যে তাঁদের এই আন্দোলনটি অকারণে শুরু হয়েছে। এটা আমাকে গভীর পীড়া দেয় এ জন্য যে, দেশের সবচেয়ে শিক্ষিত গোষ্ঠী একটি আন্দোলন করছেন। সর্বোপরি সরকারি সিদ্ধান্ত না জেনেই তাঁরা আন্দোলনে নেমে গেলেন। আমি বলতে চেয়েছিলাম, তাঁরা আন্দোলনে চলে গেলেন যখন, তাঁরা পুরো বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না।

‘তাঁদের আন্দোলনটি তাঁদের অনবহিতির জন্য। তাঁরা সঠিক তথ্য জানতেন না বলে তাঁরা আনইনফরম্‌ড ছিলেন। আমি যেভাবে বক্তব্যটি দিই তাতে অবশ্যই তাঁদের মানহানি হয়েছে। কারণ জ্ঞানের অভাবে বলা এবং যথাযথ তথ্য সম্পর্কে অনবহিত বলার মধ্যে যথেষ্ট তফাৎ রয়েছে। আমি আমার বক্তব্য সম্পর্কে খুবই দুঃখিত। তবে বিস্মিত যে তাঁরা সরকারি সিদ্ধান্ত জানার আগেই আন্দোলনে নেমে যান। আমার এ বক্তব্য যেভাবে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা অনভিপ্রেত ছিল। আমি তা প্রত্যাহার করছি।

‘এ জন্য যারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন বা দুঃখ পেয়েছেন, তাঁদের কাছে বিনীত অনুরোধ যে ভুল বোঝাবুঝির এখানেই সমাপ্তি হোক।’

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির ওপর আরোপিত ভ্যাট সম্পর্কেও কথা বলেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাট প্রত্যাহার করা হবে না। একজন ছাত্র দৈনিক এক হাজার টাকা খরচ করতে পারলে ভ্যাট কেন দিতে পারবে না? এটা রাজস্ব আদায়ের ভালো একটি উৎস। রাজস্ব আহরণ বাড়াতেই এটা করতে হয়েছে। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ টিউশন ফির মাধ্যমে এ ভ্যাট ছাত্রদের ওপর চাপিয়ে দিতে পারবে না, চাপিয়ে দেওয়া তাদের উচিত হবে না।’

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চলমান উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এখানে শিক্ষকেরা দুই পক্ষে বিভক্ত। শিক্ষার্থীরাও বিভক্ত। আমার বিনীত অনুরোধ থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থিতিশীল পরিস্থিতি রক্ষার স্বার্থে উভয় পক্ষ শান্ত থাকবেন।’ উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে কি না? এই প্রশ্নে মন্ত্রী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, সাংসদ ইমরান আহমেদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিছবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান প্রমুখ।

error: দুঃখিত!