২৩শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রবিবার | রাত ১১:৩০
লঞ্চের কেবিনে সিরাজদিখানের স্কুলছাত্রী সেতু মন্ডল কে ধর্ষণ করে প্রেমিক
খবরটি শেয়ার করুন:

যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে এমন প্রতিশ্রতি দিয়েই মন্দিরে নিয়ে হাতের আঙ্গুল কেটে সিঁথিতে সিঁধুর পড়িয়ে প্রেমিকার আস্থা অর্জন করে একাধিকবার ধর্ষণ করে পালিয়েছে কথিত প্রেমিক হযরত আলী ওরফে সজল (২৭)। এ ঘটনার রেশ ধরে আত্মহত্যা করেছে ধর্ষণের শিকার মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকার স্কুলছাত্রী সেতু মন্ডল।

গত (১০ এপ্রিল) বুধবার সিরাজদিখান এলাকা থেকে রাজধানীর শাখারি বাজারের একটি মন্দিরে এনে সিঁদুর পড়িয়ে বাড়ি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চলন্ত লঞ্চে একাধিকবার প্রেমিকা সেতু মন্ডলকে ধর্ষণ করে সজল। সেতুর আত্মহত্যার পর মায়ের করা মামলা তদন্ত করতে গিয়ে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) ভোরে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার কুচিয়ামোড়া এলাকা থেকে পলাতক প্রেমিক সজলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করলে দোষ শিকার করে ১৬৪ ধারা জবানবন্দী দিলে আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। সজল উপজেলার উনানিয়া গ্রামের আ. মজিদ সরদারের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১০ এপ্রিল সেতু মন্ডল বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের আগে সেতু মন্ডলের সাথে সজল একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করে। সজল কেরানীগঞ্জ থেকে সিরাজদিখান উপজেলার গোয়ালখালী এলাকায় গিয়ে সেতুকে সাথে করে নিয়ে যায় ঢাকা শাখারী বাজার একটি মন্দিরে। যার যার ধর্ম সে সে পালন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে হাতের আঙ্গুলের রক্ত দিয়ে সিঁথিতে সিঁদুর পড়িয়ে সজল বিয়ে করে সেতুকে।

এরপরই সজল সেতুকে তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঢাকা থেকে বরিশালের লঞ্চে কেবিন ভাড়া করে। রাতে লঞ্চে করে বরিশাল যাওয়ার পথেই একাধিকবার সেতুকে ধর্ষণ করে সজল। অথচ বাড়ি না গিয়ে বরিশাল থেকে পুনরায় ভোরে ঢাকার পথে রওয়ানা করে এবং পুনরায় তাদের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সর্ম্পক হয়। ১১ এপ্রিল সকালে কেরানীগঞ্জে গোলাম বাজার এলাকায় সেতুকে রেখে পালিয়ে যায় সজল।

গোলাম বাজার পুলিশ ফাঁড়ির মাধ্যমে সেতু উদ্ধার হয়ে রাতে বাড়ি ফিরে যেতে পারলেও ১৭ এপ্রিল সেতু মন্ডল আত্মহত্যা করলে সেতুর মা বাদী হয়ে একই এলাকার সোহেল নামের এক যুবককে প্রধান ও অজ্ঞাত আরো ২জনকে আসামি করে সিরাজদিখান থানায় মামলা করে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনার পূর্বে সোহেল ও পলাশের সাথে সেতুর প্রেমের সর্ম্পক ছিল।

সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন জানান, ইতোপূর্বে আমরা সোহেল এবং পলাশকে আটক করেছি কিন্তু ডিজিটাল প্রযুক্তিতে আমরা মূল আসামি হযরত আলী ওরফে সজলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। সোহেলকে সেতু মন্ডলের মা সজল বলে দাবী করেন যদিও কিন্তু এটা সঠিক না। সেতু যখন বিয়ে করেন তখন বলেন- যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে আর হযরত আলীর নাম সজল রাখা হয়। সেতু তার মাকে এই সজলের নামই বলেন।

উল্লেখ্য ১৭ এপ্রিল সকালে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাকরে গুরুতর আহত হলে ঢাকা মিডফোর্ড হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় সেতু মন্ডল। এ ঘটনায় সাবেক প্রেমিক সোহেল ও পলাশকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।

error: দুঃখিত!