মুন্সিগঞ্জ, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, বিশেষ প্রতিনিধি, (আমার বিক্রমপুর)
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আয়োজিত সমাবেশ আয়োজনে ‘গোপন সহায়তা’ ও প্রত্যাবাসনবিরোধী উসকানির অভিযোগে কক্সবাজারে দুটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে এনজিও ব্যুরো।
অ্যাডভেনটিস্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিলিফ এসেন্সি- আদ্রা এবং আল মারকাজুল ইসলামী নামের এনজিও দুটির ব্যাংক লেনদেনও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে এনজিও ব্যুরোর চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, “আমরা নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেব।”
মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা নতুন-পুরনো ১১ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়ে আছে। বিভিন্ন দেশি-বিদেশি এনজিও সেখানে রোহিঙ্গাদের জরুরি সহায়তা দিতে কাজ করছে।
গত ২২ অগাস্ট রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরানোর দ্বিতীয় দফা চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেলে সরকারের তরফ থেকে বলা হয়, দেশি-বিদেশি কিছু এনজিও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ফিরতে নিরুৎসাহিত করছে।
এর তিন দিনের মাথায় রোহিঙ্গা সঙ্কটের দ্বিতীয় বছর পূর্তির দিনে উখিয়ার কুতুপালং মধুছড়া ক্যাম্পের মাঠে হাজার হাজার রোহিঙ্গার সমাবেশ শরণার্থী ব্যবস্থাপনা ও এনজিও কার্যক্রম নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্নের জন্ম দেয়।
রোহিঙ্গাদের ওই সমাবেশে তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র দেখা যায়। কক্সবাজারের উখিয়ার কোটবাজার এলাকায় একটি কামারের দোকান থেকে লোহার তৈরি ধারালো প্রায় সাড়ে ছয়শ’ সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
ওই ঘটনায় ‘মুক্তি কক্সবজার’ নামের এনজিওর ছয়টি প্রকল্প সাময়িকভাবে স্থগিত করে সরকার। এরপর ‘নানা অপকর্মে’ জড়িত থাকার অভিযোগে প্রায় অর্ধশত এনজিওকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকার কাজ থেকে প্রত্যাহারের কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
বুধবার আরও দুটি এনজিওর বিষয়ে এনজিও ব্যুরোর নির্দেশনা পাওয়ার কথা জানিয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আশরাফুল আফসার বলেন, “আদ্রা ও আল মারকাজুল ইসলামীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের মাঝে প্রত্যাবাসনবিরোধী উসকানি এবং গত ২৫ অগাস্ট সমাবেশ আয়োজনে গোপন সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণেই তাদের কার্যক্রম ও ব্যাংক লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এনজিও ব্যুরো।”
রোহিঙ্গা সঙ্কট শুরুর পর নানা অভিযোগে এর আগেও ছয়টি এনজিওর কার্যক্রম স্থগিত করেছে সরকার। এগুলো হলো ইসলামিক রিলিফ, ইসলামিক এইড, মুসলিম এইড, স্মল কাইন্ডনেস বাংলাদেশ, বাংলাদেশ চাষী কল্যাণ সমিতি ও নমিজান আফতাবি ফাউন্ডেশন।