২৪শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সোমবার | রাত ১২:৩৭
মুন্সিগঞ্জে প্রতিবন্ধির জমি দখলের চেষ্টা, প্রতিবাদে মানববন্ধন
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, বিশেষ প্রতিনিধি, (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে স্থানীয় প্রভাবশালী মাওলানা আব্দুস সামাদের নেতৃত্বে অসহায় প্রতিবন্ধির বসতভিটা জবর-দখল করে নেয়ার প্রতিবাদে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলার রাঢ়ীখাল ইউনিয় পরিষদ সংলগ্ন ঢাকা-দোহার সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় মানববন্ধনে প্রানীমন্ডল গ্রামসহ রাঢ়ীখাল ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের জনগন অংশ নেয়।

ভূক্তভোগী অসহায় শারীরিক প্রতিবন্ধি সোহাগ জানায়, প্রায় ৩ মাস পূর্বে তার মা ভাগ্য বিবি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

ভাগ্য বিবির সাথে উপজেলার প্রানীমন্ডল মৌজার আর.এস ৫৬৬ নং খতিয়ানের ৩৬১ নং দাগের ১৪ শতাংশ বাড়ি ও ৪০৯ নং দাগের সোয়া ২ শতাংশ নাল জমিসহ মোট সোয়া ১৬ শতাংশ জায়গা নিয়ে মৃত বন্দর আলীর ছেলে স্থানীয় প্রভাবশালী মাওলানা আব্দুস সামাদ শেখের ১৫/২০০৭ নং প্রিভেনসন মোকাদ্দমা চলছিল।

ওই মামলায় মাওলানা আব্দুস সামাদ শেখ আদালতের রায় পায়।

গত বুধবার ২৮ আগস্ট আদালতের নির্দেশে ম্যাজিষ্ট্রেট সোয়া ১৬ শতাংশ জায়গার স্থাপনা ভেঙ্গে মাওলানা সামাদকে বুঝিয়ে দিয়ে চলে যান।

পর মুহুর্তে স্থানীয় প্রভাবশালী মাওলানা আব্দুস সামাদ শেখ ও হারুন শেখের ছেলে শাহিনের নেতৃত্বে বহিরাগত প্রায় ৪০/৫০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল আলাদা ভাবে একই দাগে সোহাগের ক্রয় কৃত ৩ শতাংশ সহ অন্য শরিক বাসেদ শেখের সোয়া ২ শতাংশ বাড়ি ও ১৫ শতাংশ নাল জমি জোড় পূর্বক জবর-দখল করে নেয়। ভিটে মাটি ছারা হয়ে অসহায় দিন মজুর শারীরিক প্রতিবন্ধি সোহাগ পরিবারের প্রায় ২৫ জন সদস্য নিয়ে সরকারি রাস্তার পাশে ডেরা বানিয়ে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন।

হঠাৎ গত ৩০ আগষ্ট শুক্রবার বিকেলে শ্রীনগর থানা পুলিশ শারীরিক প্রতিবন্ধি সোহাগের আশ্রয় নেওয়া রাস্তার পাশের ডেরাটি ভেঙ্গে দেয়।

পূনরায় রাস্তার পাশে ডেরা করে বসবাস করলে সবাইকে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া হবে বলে থানা পুলিশ শাসিয়ে যায়।

অসহায় পরিবারটি মাওলানা আব্দুস সামাদের সংঘবদ্ধ লোকজন ও থানা পুলিশী ভয়ে আতংকে দিন কাটাচ্ছে।

জোর পুর্বক জবর দখল বিষয়ে মাওলানা সামাদের মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বসত বাড়ির সম্পূর্ন জায়গার রায় আমি পেয়েছি।

রায়ের কাগজ দেখতে চাইলে তিনি কাগজ দেখাতে অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় রাঢ়ীখাল ইউপি চেয়ারম্যান বারেক খান বারির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাওলানা আব্দুস সামাদ ও ভাগ্যবিবির মাঝে দীর্ঘ দিন ধরে মামলা চলছিল। মামলা বিষয়ে আমরা গত ইংরেজি ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর সালিশ বৈঠকে বসি।

এ সময় সালিশ বৈঠকে প্রানীমন্ডল গ্রামের ইউপি সদস্য আমির দেওয়ান ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ শেখ, মাইজপাড়ার ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ, দামলা ইউপি সদস্য ফারুক ঢালী, মহিলা ইউপি সদস্য রোমা বেগম, দামলা গ্রামের সালাম আজাদসহ স্থানীয় অনেক গন্য মান্য ব্যক্তি বর্গে উপস্থিত ছিলেন। সালিশ মিমাংসার সিন্ধান্ত মতে সোহাগের মা ভাগ্য বিবি মামলা উঠিয়ে নিবে এবং মাওলানা সামাদ ভাগ্য বিবিকে সোয়া ১৬ শতাংশ বাড়ির জায়গা হতে ১০ শতাংশ জায়গা লিখে বুঝিয়ে দিবেন। ভাগ্যবিবি মামলা উঠিয়ে নেওয়ার পর মাওলানা আব্দুস সামাদ ভাগ্য বিবিকে জায়গা লিখে না দিয়ে নানা ধরনের টাল বাহানা শুরু করতে থাকেন।

এ ব্যাপারে শ্রীনগর থানার তদন্ত (ওসি) মোঃ হেলাল উদ্দিন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তায় এলাকাবাসীর যাতায়াতে কোন সমস্যা না হয় সে জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল।

error: দুঃখিত!