মুন্সিগঞ্জ, ৬ আগস্ট ২০২৪, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মুন্সিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিজয় মিছিল নিয়ে উল্লাস করতে করতে বেড়িয়ে পড়েন হাজার হাজার মানুষ।
এসময় বিক্ষুদ্ধ জনতার মিছিল থেকে শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় ট্রাফিক অফিস কার্যালয়, থানারপুল এলাকায় সদর থানা কার্যালয়, কাচারি এলাকায় মুন্সিগঞ্জ পৌরসভা কার্যালয় ও মধ্য কোটগাও এলাকায় মুন্সিগঞ্জ ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লবের বাসভবনে আগুন দেয়া হয়। এতে ওই ভবনগুলো পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়।
পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের সময় সদর থানা ও ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয় থেকে সরকারি অস্ত্র লুটের ঘটনা ঘটে। এগুলোসহ ভাঙচুরের কারনে বন্ধ রয়েছে জেলার ৪টি থানার সকল কার্যক্রম।
এদিকে, রোববার (৪ আগস্ট) জেলা শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গিয়ে গ্রেপ্তারকৃত ৫ শিক্ষার্থীর জামিনের ব্যবস্থা করে জেলা কারাগার থেকে মুক্ত করেছে সেনাবাহিনী ও মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসন।
এছাড়া সোমবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়িতে ভাঙচুর-লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। একইদিন বিকালে শহরের মুক্তারপুর পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় বিক্ষুব্ধদের হাতে গণপিটুনির শিকার হয়ে মারা গেছেন মো. মুসা (৩৮) নামের এক ব্যক্তি। তিনি মুক্তারপুর এলাকার মো. সবুর মিয়ার পুত্র ও পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার সহকারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. আসলাম খান বলেন, ‘আগুনে মুন্সিগঞ্জ সদর থানা ও ট্রাফিক কার্যালয় পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। নাগরিকদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্বলিত সকল নথিপত্র ধ্বংস হয়ে গেছে। অনেক পুলিশ সদস্যের হাত-পা ভেঙে গেছে। এছাড়া সিরাজদিখান, শ্রীনগর ও টংগিবাড়ী থানা ভাঙচুর করা হয়েছে। এসব কার্যালয় থেকে পুলিশি সেবা স্থগিত রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ সরকারি অস্ত্র আমরা নিরাপদে নিতে পারলেও অনেক অস্ত্র-গোলাবারুদ লুট হয়েছে। আমরা সেগুলো শহরের স্টেডিয়ামে সেনাক্যাম্পে জমা দেয়ার আহবান জানিয়েছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সময় লাগবে। জেলাবাসীকে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার আহবান জানাচ্ছি।’