২৪শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শনিবার | রাত ৩:২৩
মুন্সিগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়ির মালিককে পেটালো পুলিশ
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ১৮ এপ্রিল, ২০২০, শহর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জে বাড়ির ফটক তালাবদ্ধ করে রাখায় এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বাড়ির মালিককে পিটিয়েছে ভাড়াটিয়া পুলিশ কনস্টেবল।

শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) মুন্সিগঞ্জ শহরের শ্রীপল্লী এলাকায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান সালিনকে নির্মমভাবে পিটিয়েছে বাড়ির ভাড়াটিয়া পুলিশ কনস্টেবল রফিকুল ইসলাম। এই পুলিশ কনস্টেবল (নং ৫৪৭) মুন্সিগঞ্জ সদর ফাঁড়িতে কর্মরত।

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান সালিন জানান, করোনা পরিস্থিতির জন্য সকলের স্বার্থেই বাড়িটির ফটক তালাবদ্ধ করা রাখা হচ্ছে। কেন তালাবদ্ধ করা হচ্ছে এই নিয়ে এই পুলিশ সদস্য বেলা আড়াইটায় প্রথমে বাড়িটির মালিক তার মা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা শামীমা বেগমের সাথে অশালীন আচরণ করে। তখন হাবিবুর রহমান এসে প্রতিবাদ করতেই তুই তুকারি বলে তার সাথে আপত্তিকর আচরণ করেই আকস্মিক হাতে থাকা লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে পেটাতে থাকে এবং নানাভাবে আঘাত করে। কপাল ফেটে দর দর করে রক্ত ঝড়তে থাকে। তার বৃদ্ধ মা চেষ্টা করে শেষ রক্ষা করতে পারেননি।

এই সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে তার জন্যও হুমকি দেয় এই পুলিশ সদস্য। পরে রক্তাক্ত এই ইঞ্জিনিয়ার করোনায় লকডাউন অবস্থার মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকের কাছ থেকে জরুরি চিকিৎসা নেন।

অভিযুক্ত কনস্টেবল বলেন, “বাড়ির ফটকে তালা দেয়ার কারণে বাসায় যাওয়া-আসা নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল, তেমন কিছুই হয়নি।”

তিনি জানান, এই বাড়িটিতে তিন মাস ধরে থাকেন, মুন্সিগঞ্জে চাকুরী করছেন ১৩ বছর ধরে।

এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি আনিচুর রহমান বলেন, এখনও কোন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

ওসি আরও বলেন, আমি ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে এসেছি, আমাদের পুলিশ সদস্যের দোষ ছিল। বিষয়টি পুলিশ সুপার স্যারও অবহিত আছেন। তার (কনস্টেবল রফিক) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

হাবিবুর রহমান সালিন ঢাকার মহাখালীতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানীর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তার বাবা প্রয়াত ব্যাংকার আব্দুল হান্নান একজন সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। ‘নিরীহ পরিবার’ হিসাবে শহরে তাদের সুপরিচিতি আছে।

এদিকে ঘটনাটি জানাজানির পর এই পুলিশ কনস্টেবলসহ আর কয়েক পুলিশ সদস্য তাদের বাসায় গিয়ে ‘সরি’ বলে অভিযোগ না দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে গেছেন। কিন্তু এই পুলিশ সদস্য আমলযোগ্য অপরাধ করার পরও তাকে গ্রেফতার না করে, কেন রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে? প্রশ্ন পরিবারটির।

পরিস্থিতি এখন এমন দাঁড়িয়েছে, পরিবারটি আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছে।

error: দুঃখিত!