১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | রাত ১০:২২
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
আড়িয়ল বিলের ধান কাটতে কৃষকদের কম্বাইন মেশিন দিবেন এমপি মাহী বি চৌধুরী
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ১৮ এপ্রিল, ২০২০, শ্রীনগর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারাদেশে এখন লকউন চলছে। সার্বিকভাবে এর প্রভাব পড়েছে সর্বস্তরে। বছরের এই সময়ে কৃষকদের ব্যস্ততা শুধু ধান নিয়ে।

বর্তমান করোনা পরিস্থিতেতে সারা দেশের ন্যায় মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরেও হাজার হাজার হেক্টর জমির পাকা ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরেছেন এখানকার শত শত কৃষক।

আড়িয়লবিল পাড়ের শতশত কৃষকের ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকার বিষয়টি মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের এমপি মাহী বি চৌধুুরীর নজর কাড়ে। পরে তিনি বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় এই অঞ্চলের কৃষকদের সার্বিক সুবিধার্থে স্থানীয় কৃষি অফিস ও কৃষি মন্ত্রণালয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তাগিদ দেন।

এরই ধারাবাহিকতায় খুব শীঘ্রই আড়িয়লবিলের ধান কাটা ও সোনালী ফসল ঘরে তুলতে শ্রমিকের অভাব মেটাতে কৃষকদের উন্নত প্রযুক্তিসম্পর্ন ধান কাটার মেশিনের (কম্বাইন হারবেস্টার) ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন বলে কেন্দ্রীয় বিকল্প যুবধারার যুগ্ন-সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, আগামী ২০ তারিখের মধ্যে উন্নতমানের প্রযুক্তিসম্পন্ন কয়েকটি ধান কাটার মেশিনগুলো উপজেলায় আনা হবে। আশা করছি কম্বাইনগুলো এখানকার কৃষকদের কিছুটা শ্রমিকের অভাব পূরণ করতে পারবে।

এর আগে করোনা রোধে স্থানীয় হাজার হাজার কৃষক শ্রমিকের অভাবে এতোসব জমির পাকা ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকার বিষয়টি বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু করেন শ্রীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানগণ।

লকডাউন পরিস্থিতিতে শ্রমিকের অভাবে যাতে এখানকার কৃষকদের জমির পাকা ধান কাটতে কোনও অসুবিধা না হয় সে লক্ষ্যে তারাও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করেন। ধান কাটার শ্রমিকরা যাতে এখানে আসার ধারাবাহিকতা বজায় থাকে সে লক্ষ্যে কাজ করছেন।

শ্রীনগর উপজেলার অতিরিক্ত (ভারপ্রাপ্ত) কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা আসছে। স্থানীয় কৃষকদের নামের তালিকা নেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের ধান কাটার জন্য আশ পাশের জেলা থেকে কম্বাইন মেশিনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রায় হাজার কৃষকের নামের তালিকা হাতে পেয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য ও ডিসি স্যারের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা কৃষকদের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। বর্তমান করোনা মোকাবেলার পাশাপাশি কৃষকরা যেন তাদের সোনালী ফসল নিরাপদে ঘরে তোলতে পারেন সে লক্ষ্যে কাজ করছি। আগামী কয়েকদিনে মধ্যেই ক্ষেতের পাকা ধান কাটার জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

উল্লেখ্য, আড়িয়লবিলে সব মিলিয়ে শ্রীনগর, দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা প্রায় ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ইরি ধানের আবাদ করেন।

শ্রীনগর উপজেলায় মোট ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়। এর মধ্যে আড়িয়লবিলেই এখানকার কৃষকার ৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের চাষ করে থাকেন। উপজেলার অন্যান্য ছোট বিল বা চকে আরো কিছুদিন পরে ধান পাকা শুরু হলেও আড়িয়লবিলের চিত্র ভিন্ন।

কারণ হিসেবে জানা যায়, আড়িয়লবিলের নিচু জমিতে আগাম ধানের চারা রোপন করতে হয়। তাই অন্যান্য স্থানের তুলনায় এখানকার জমিতে ধান আগেই পাকে। যদি এখনই জমির পাকা ধান কাটা সম্ভব না হয় তাহলে বৈশাখীর ঝড়-বৃষ্টি মোকাবেলাসহ জোয়ারের নতুন পানিতে বিলের সব নিচু ধানের জমি ডুবে যাবে। এতে করে হাজার হাজার সাধারণ কৃষক ক্ষতির মুখ দেখবেন।

অন্যদিকে তাদের বছর জুড়ে খাদ্য সংকটে থাকতে হবে। একদিকে করোনার প্রভাব অন্যদিকে জমিতে পাকা ধান রেখে এখানকার কৃষক-কৃষাণি দুশ্চিন্তায় দিশেহারা হয়ে উঠেছেন।

error: দুঃখিত!