‘ভোট মানে আনন্দ। এই আনন্দ করতেই আসছি। দোকান দিয়েছি, কিছু পয়সাও হবে। ভোটও দেব।’ কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহীর দুর্গাপুরের রৈপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের পাশে বসা মেলার একজন দোকানি হোসেন আলী। তাঁর মতো আরও ১৫ জন দোকানি বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন এই মেলায়। পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে বসেছে এই মেলা।
অন্য এক দোকানি আলী আহমদ বলেন, ‘চাষের কাজ করি। ভোট উপলক্ষে মেলায় দোকান দিছি।’ তাঁর দোকানে বিভিন্ন ধরনের জুস, বিস্কুট, চুইংগাম ও চানাচুর রয়েছে। এ ছাড়া মেলার বিভিন্ন দোকানে জিলাপি, ঝালমুড়ি, ধনিয়াপাতার চপ, ছোলা, বাদাম ও লাড্ডু বিক্রি হচ্ছিল।
চারঘাট পৌরসভার থানাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে গিয়ে দেখা গেল জিলাপি, বাতাসা, খাগড়াই আর লাড্ডু সাজিয়ে বসে আছেন হাবিব নামে একজন দোকানি। এখানে বাঁশি, বেলুন, মুখোশ আর হরেক রকমের খেলনা নিয়ে শিশুদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন তিনি।
দোকানের সামনে কথা হয় পাঁচ বছরের শিশু সাথী খাতুনের সঙ্গে। মাথায় মেয়র প্রার্থী আবদুল মজিদের নৌকা মার্কার ক্যাপ। সাথী বলল, বাবার সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে এসেছে। অন্য সব শিশুর মাথায় ক্যাপ দেখে বাবার কাছে বায়না ধরে সেও ক্যাপ পরেছে।
দোকানি তৈয়বুর আলী বলেন, কোনো গন্ডগোল না হলে ভোটের দিনে কেন্দ্রগুলোতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।
হঠাৎ করে এই দৃশ্য দেখে যে কেউ ভাবতে পারেন ঐতিহ্যবাহী কোনো গ্রামীণ মেলার কথা। কিন্তু এই মেলা বসেছে পৌর নির্বাচনের ভোট উৎসবকে কেন্দ্র করে। বাবা-মা কিংবা দাদা-দাদির সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে এসে এ মেলায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন বয়সী শিশুরা। পৌরসভা নির্বাচন যেন উৎসবের উপলক্ষ নিয়ে এসেছে এ সব শিশুর জন্য।
গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট পৌরসভা নির্বাচনে ৮-নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বেলুন, বল, বাঁশি, মুখোশসহ হরেক রকম খেলার পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। দোকানের চারপাশে দড়িতে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের পোস্টার। দোকানগুলোতে শিশুদের উপচে পড়া ভিড়। সবার মাথায় প্রার্থীদের প্রতীক সংবলিত ক্যাপ।
রৈপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কিংবা থানাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়াও দুর্গাপুর, পুঠিয়া, আড়ানি, কাটাখালি, কাঁকনহাট ও চারঘাট পৌরসভার সব ভোটকেন্দ্রের কাছেই দেখা গেছে এমন ছোট ছোট মেলার দৃশ্য।