১৯শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | সকাল ৯:৩৮
প্রার্থীরা প্রচারণার সুযোগ পাচ্ছেন অার মাত্র ৪৮ ঘণ্টা
খবরটি শেয়ার করুন:

আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনের আর মাত্র তিনদিন বাকি। এরই মধ্যে এ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসি থেকে শনিবার ব্যালট পেপার পৌঁছে গেছে প্রতি জেলায়। রোববারের মধ্যে তা ২৩৪ পৌরসভার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌঁছে যাবে।

এদিকে ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ২৮ ডিসেম্বর (সোমবার) দিবাগত রাত বা ২৯ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) প্রথম প্রহরে প্রার্থীদের সব ধরনের প্রচার বন্ধ করতে হবে। সে হিসেবে এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা প্রচার করার জন্য সময় পাচ্ছেন আর মাত্র ৪৮ ঘণ্টা।

বিধি অনুযায়ী, ভোটের ৩২ ঘণ্টা আগে প্রার্থীদের সব ধরনের প্রচার শেষ করতে হবে। সেই সঙ্গে ভোট শেষের পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টাও কোনো মিছিল-শোডাউন করা যাবে না।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনী এলাকায় রোববার মধ্য রাত থেকে মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে। সেই সঙ্গে সোমবার সকাল থেকে নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ করতে মাঠে নামছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ২৮ তারিখ মধ্যরাতের পর আর কোনো প্রার্থী প্রচার চালাতে পারবেন না।

এদিকে, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মেনে ২৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১২টা থেকে ৩০ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।
২৩৪ পৌরসভায় বেবিট্যাক্সি, ট্যাক্সি ক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক ও টেম্পোতে এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কামরুল আহসান এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেন।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমোদিত পরিচয়পত্রধারী, নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। জাতীয় মহাসড়ক, বন্দর, জরুরি পণ্য সরবরাহ ও অন্যান্য প্রয়োজনে এ নিষেধাজ্ঞা শিথিল হবে।

ইসির উপসচিব সামসুল আলম জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রোববার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত পরিপত্র জারি হবে। সোমবার থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে থাকবে।
নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে সামসুল আলম বলেন, মাঠপর্যায়ে নির্বাচনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যেসব কার্যক্রম করতে হবে তার বিস্তারিত নির্দেশনাসহ ১২টি পরিপত্র দেওয়া শেষ হয়েছে। এখন রিটার্নিং কর্মকর্তারা নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ভোটের আয়োজন শেষ করবেন।

ইসির উপসচিব বলেন, বিধি লঙ্ঘন, অভিযোগসহ কোনো বিষয়ে মাঠ কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত চাইলে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে ইসি। এ ছাড়া বাকি সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ক্ষমতা দেওয়া রয়েছে। প্রচারের শেষ সময়ে বিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ কর্মকর্তা জানান, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারাও প্রস্তুত রয়েছেন। প্রচারণা শেষের দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে থাকবে। সোমবার রাত ১২টা থেকে কোনো প্রচারণা থাকবে না। নির্বাচনী সামগ্রী কেন্দ্রে যাবে ভোটের আগের দিন। ফলে আর ৪৮ ঘণ্টা পর ভোটের জন্য প্রস্তুত হবেন মাঠ কর্মকর্তারা।

ব্যালট পেপার পাঠানো প্রসঙ্গে ইসির উপসচিব সাজাহান খান জানান, শনিবার পৌর নির্বাচনের দুই কোটি ১০ লাখের বেশি ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সামগ্রী ঢাকা থেকে সারা দেশে পৌঁছেছে। রোববার পৌরসভাগুলোতে বিতরণ করা হবে। ব্যালট পেপার, সিল, ফলাফল প্রস্তুত-বিতরণের ফরম-প্যাকেটসহ নির্বাচনী সামগ্রী কেন্দ্রভিত্তিক পৌঁছে যাবে।

ইসি সূত্র জানায়, প্রায় সাড়ে তিন হাজার ভোটকেন্দ্রের জন্য প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা মিলিয়ে ৬৫ হাজারের বেশি ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল চূড়ান্ত হয়েছে। এই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের চার কোটি ২২ লাখ ২৬ হাজার ৬৫০ টাকা ব্যয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

ইসি সূত্রে আরো জানা যায়, পৌরসভা নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ইসি থেকে চারজন সংসদ সদস্যসহ শতাধিক প্রার্থী-সমর্থককে জরিমানা, শোকজ-সতর্ক করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, তফসিল ঘোষণা পরবর্তী এক মাসে নির্বাচন কমিশন ৭৮টি অভিযোগের বিষয়ে মাঠ কর্মকর্তাদের তদন্ত করতে বললেও অধিকাংশেরই প্রতিবেদন এখনো ইসিতে আসেনি। এর মধ্যে যে ১৮টি প্রতিবেদন এসেছে তাতে অধিকাংশের সত্যতা পায়নি রিটার্নিং কর্মকর্তারা। কয়েকটির বিষয়ে স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ইসিতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩৪ পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এসব পৌরসভায় মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রায় ১২ হাজার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এরই মধ্যে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় ২৩৪ পৌরসভায় ছয়জন মেয়র, ৯৪ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৪০ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

error: দুঃখিত!