মুন্সিগঞ্জ ২৬ অক্টোবর, ২০১৯, সদর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
‘প্রতিবন্ধীরা সমাজের কোন বোঝা নয়, যত্ন করলেই তারা রত্ন হয়। সমাজের অবহেলিত প্রতিবন্ধীদের মৌলিক অধিকার এবং তারা যে মানুষ হয়ে এ পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করেছে তারই অধিকার বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে আমাদের এই প্রচেষ্টা।’ কথাগুলো বলছিলেন মুন্সিগঞ্জ সদরের দেলোয়ার হুসাইন যিনি ব্যবসায়ীক উদ্দেশ্যের বাইরে ভিন্ন এক স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন।
প্রতিবন্ধীদের জীবনমান উন্নয়নে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মুন্সীরহাট সংলগ্ন চরশিলমন্দী এলাকায় স্কুলটি চালু করেন দেলোয়ার হুসাইন। কোনরকম বেসরকারি সহযোগিতা ছাড়া নিজস্ব অর্থায়নে চলছে স্কুলটি। তাই বর্তমানে স্কুলটিতে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে।
২০১৩ সালে মাত্র ৪ জন অটিজম শিশু নিয়ে স্কুলটি চালু করেন দেলোয়ার। ২০১৫ সালে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এসে দাড়ায় ২৬ জনে। আর বর্তমানে স্কুলটিতে শিক্ষার্থী রয়েছে ৭০ জন। প্রতিবন্ধী শিশুদের পাঠদানে আছেন ৮ জন শিক্ষক ও শিক্ষিকা। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, ছবি আঁকা সহ সাংস্কৃতিক শিক্ষা ও দেওয়া হয়।
এদের কারও বয়স ৫, কারও ৮, আবার কারও ১৪ থেকে ১৫, আবার কেউ আরো বেশি বয়সের। সবাই এক সঙ্গে বসে সুশৃঙ্খল ভাবে পড়া লেখা শিখছে, সমাজের মূল ধারায় এসব শিশুদের নিয়ে আসতেই এমন উদ্যোগ-‘আমার বিক্রমপুর’ কে বলেন দেলোয়ার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে, বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর শতকরা ১৫ শতাংশ কোন না কোনভাবে প্রতিবন্ধী। পূর্ণ পরিসংখ্যান না থাকলেও, বেসরকারি হিসেবে বাংলাদেশে প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি বলে ধারণা করা হয়। দেশটিতে এই বিপুল পরিমাণ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশই শিক্ষার সুযোগ পায়না। আর উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এই সংখ্যা খুবই নগণ্য।
মুন্সিগঞ্জ সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মাইনুদ্দিন সরকার বলেন, যারা সমাজে বিত্তবান আছেন এবং যারা সুশীল সমাজের লোকজন আছেন, তারা যদি অর্থ সহায়তায় এগিয়ে আসেন তাহলে স্কুলটি আরও উন্নতি লাভ করবে।
প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য সুমন লাল আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিবন্ধীরা সমাজের কোন বোঝা নয়, ওরা আমাদের সন্তান। আমরা ওদের জীবনমান উন্নয়ন করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতিষ্ঠান টি চালাতে অনেক অর্থের প্রয়োজন, বর্তমানে আমরা আর্থিক ভাবে সংকটে আছি।
তিনি বলেন, আমরা ওদের জন্য আলাদা জমি কিনে স্কুল স্থাপন করতে চাই। খেলার মাঠ করবো-বর্তমানে ওদের খেলার মাঠ নেই। তাই আমি মনে করি যে সমাজের বৃত্তবানদের এবং সরকারী-বেসরকারী দাতা সংস্থার সহযোগীতা পেলে প্রতিবন্ধী শিশুদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে আরো সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে পলক অটিজম স্কুল।
কোন সহৃদয়বান ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সহযোগিতা করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেনঃ ০১৭১৭-১০৮৫১৫, ০১৯৪৪-৭৪৪৪৩৫