মুন্সিগঞ্জ, ২ আগস্ট, ২০২২, গজারিয়া প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় চলন্ত লঞ্চে বিদ্যুতের খুঁটি নিচ দিয়ে অতিক্রম করার সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে মো. নিলয় (১৮) নামে এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি পাঙ্গাসিয়া খাল থেকে লাশটি উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
এর আগে গতকাল সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে লাশ উদ্ধার হওয়া স্থানে বিদ্যুতায়িত হয়ে পানিতে পড়ে নিখোঁজ হয় নিলয়।
নিলয় ইমামপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামের পশু চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ আলীর ছেলে।নিলয় গজারিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণির বাণজ্য বিভাগে পড়াশোনা করত।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বন্ধুদের সঙ্গে বনভোজনে যাওয়ার কথা ছিল নিলয়ের। এজন্য নিলয় সহ তার কয়েকজন বন্ধু সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ থেকে এমএল হাসিব নামে একটি লঞ্চ ভাড়া করেন। লঞ্চটি তারা নারায়নগঞ্জ থেকে নিয়ে আসছিল। পথে হোগলাকান্দি গ্রাম সংলগ্ন পাঙ্গাসিয়া খালের ভেতর দিয়ে আসছিল। খালের উপর বিদ্যুতের তার ঝুলছিল। তারের নিচ দিয়ে লঞ্চটি অতিক্রম করার সময় লঞ্চের ওপরে থাকা নিলয় বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে পানিতে তলিয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে খবর দেওয়া।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রিফাত মল্লিক।
তিনি জানান, গতকাল খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। রাতে উদ্ধার কাজ সম্ভব না হওয়ায় ভোরে শুরু করি। সাড়ে ৫ টার দিকে লাশ উদ্ধার করে পরিবারের লোকজনকে বুঝিয়ে দেই।
তিনি আরো বলেন, বিদ্যুতায়িত হয়ে ওই কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এতে পল্লী বিদ্যুতের গাফিলতি রয়েছে।
নিলয়ের বন্ধু এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি, শুকনো মৌসুমে পানি খালের নিচে থাকে। তখন সহজেই নৌযান যাতায়াত করতে পারে। বর্ষা মৌসুমে খালে পানি বাড়লে নৌযান তারের সঙ্গে আটকে যেত। এজন্য প্রতিবছরই এখান থেকে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ট্রান্সমিটার খুলে নেওয়া হয়।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শাখা গজারিয়া এবার এ কাজটি করেননি । ছেলেটি ভেবেছিল, তারে কোন বিদ্যুৎ নেই। তাই সে হাত দিয়ে তার সরাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন।
এদিকে একমাত্র সন্তান কে হারিয়ে বাকরূদ্ধ বাবা ডা. মোহাম্মদ আলী ও মা নুরনাহার বেগম সহ স্বজনরা।
এ বিষয়ে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গজারিয়ার ডিজিএম অভিলাষ চন্দ্র পাল বলেন, আমি এখানে গত মার্চ মাসে এসেছি। প্রতিবছর এখানে বিদ্যুৎ সংযোগ খুলে রাখা হতো কিনা বিষয়টি জানা নেই। কখনো কোথাও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয় না। বিদ্যুতের তারের ব্যাপারে তার সচেতন থাকা দরকার ছিল।