মুন্সিগঞ্জ, ২০ এপ্রিল, ২০২২, সাজ্জাদ হোসেন (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জ জেলা শিশু একাডেমির নিজস্ব কোন কার্যালয় নেই। দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে ভাড়া বাসায় কার্যক্রম চলছে।
১৯৯৩ সালে শহরের কাচারির ভাড়া করা টিনশেড ঘরে মুন্সিগঞ্জে শিশু একাডেমির কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ২০০৩ সাল থেকে শহরের খালইস্ট এলাকায় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
মুন্সিগঞ্জ জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা দেওয়ান হাফিজুর রহমান বলেন, সারাবছর মুন্সিগঞ্জ শিশু একাডেমির ব্যাপক আয়োজন থাকে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার জন্য যে বাজেট দেওয়া হয় তা দিয়ে বিভিন্ন খাতে ভাড়ায় অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে হয়। জাতীয় শিশু প্রতিযোগিতায় হাজার হাজার শিশুদের সমাগম ঘটে। নিজেদের ভবন না থাকায় ধার করে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কক্ষ, শিল্পকলার অডিটোরিয়াম ভাড়া করে কাজ করতে হচ্ছে। শিশুদের নিয়ে ছোট ছোট কক্ষগুলোতে কাজ করা অনেক কঠিন। কক্ষ ভেঙে একটি বড় হল মিলনায়তন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নিজস্ব ভবন পেলে নাচ, গান, চিত্রাঙ্কন ইত্যাদি শিখতেও অনেক সুবিধা হবে। দোতলায় ভাড়া নেওয়া সাতটি কক্ষের চারটিতে প্রশাসনিক কার্যক্রম ও বাকি তিনটিতে প্রশিক্ষণের কার্যক্রম চালানো হয়। তিনি আরও জানান, একটি সময় ছিল মানুষ শিশু একাডেমির ঠিকানা জানতো না। কিন্তু সবার কাছে পরিচয় পেয়ে গেছে বর্তমান ঠিকানা। এছাড়া দুইতলা পুরো ভবনের পাশাপাশি তৃতীয় তলা শিশু একাডেমির জন্য বড় মিলনায়তন কক্ষ করার পরিকল্পনা করছি। এর জন্য যাবতীয় কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। ভবন নির্মাণের জন্য জায়গা খোঁজাখুঁজির ব্যাপারে প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে। কয়েকটি স্থানে জায়গা পেয়েছি কিন্তু এগুলো নিয়ে জটিলতা আছে। তাছাড়া ঐ স্থানে শিশু একাডেমি পরিচালনা করাও কষ্টসাধ্য হবে। জেলা প্রশাসন থেকে উপযুক্ত জমি চিহ্নিত করলে পরবর্তী ধাপগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে নিজস্ব ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
শিশু একাডেমি সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সাল থেকে শহরের খালইস্ট এলাকার একটি দোতলার ভাড়া বাসা নিয়ে শিশু একাডেমির কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ২০০০ সালের পর থেকেই নিজস্ব একটি ভবন নির্মাণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
খালইস্ট এলাকার সুফিয়া বেগম জানান, আমার এক মেয়ে চিত্রাঙ্কন ক্লাস করে শিশু একাডেমীতে। কিন্তু ছোট একটি কক্ষে গাদাগাদি করে শিখছে। শিশুরা খোলামেলা পরিবেশে ক্লাস করতে চায়। একটি কক্ষের ভিতর শিখতে আগ্রহী না। সরকার যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি জমির ব্যবস্থা করে দেয় তবে অনেক সুবিধা হবে।
বাগমামুদালীপাড়ার মুনমুন বেগম জানান, শিশু একাডেমির নিজস্ব ভবন শিগগির নির্মাণ করা প্রয়োজন। কেননা এ অঞ্চলে শিশুরা সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার ব্যাপারে আগ্রহী। শিশুদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশে নিজস্ব ভবন নির্মাণ জরুরি।
নৃত্য শিল্পী সিনথিয়া আক্তার জানান, কক্ষের ভিতর গাদাগাদি করে আমাদের থাকতে হয়। অনেক সময় শিশুদের নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। বেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এভাবে কোনো বিষয় বুঝতেও কষ্ট হয়।