মুন্সিগঞ্জ, ২৭ এপ্রিল, ২০২০, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
বিদেশ ফেরত ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসী কর্মী এবং বিদেশে অবস্থানরত ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসী কর্মীর পরিবারের জন্য বিশেষ ‘সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনী’ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম (ওকাপ)।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) সংস্থাটির সভাপতি শাকিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
এতে বলা হয়, কোভিড-১৯ শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকি নয়, দেশের কৃষক, শ্রমিক, হতদরিদ্র, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা এবং কর্মসংস্থানের সংকট তৈরি করেছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খাদ্য সরবরাহ করা, শ্রমিকের বেতন প্রদান, বিভিন্ন শিল্পের ক্ষতি কমানোর মাধ্যমে কর্মসংস্থান এবং কৃষি উৎপাদন নিশ্চিত করতে ৯৬ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এছাড়া নিম্ন আয়ের মানুষের আগামী তিন বছরের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৫০ লাখ মানুষের জন্য রেশন কার্ড তৈরির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। নিয়মিত ও অনিয়মিত অভিবাসী মিলিয়ে বাংলাদেশের প্রায় দুই কোটি অভিবাসী কর্মী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কর্মরত। এসব অভিবাসী কর্মীর কষ্টার্জিত রেমিট্যান্স (প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার) বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের সবচেয়ে বড় শক্তি।
এতে বলা হয়, কোভিড-১৯-এর চলমান বৈশ্বিক মহামারির কারণে অধিকাংশ অভিবাসী কর্মী আজ ক্ষতিগ্রস্ত। আশঙ্কা করা হচ্ছে, কোভিড-১৯-এর কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক মন্দার কারণে বিভিন্ন দেশে থেকে কয়েক লাখ শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হবে।
ওকাপ সভাপতি শাকিরুল ইসলাম বলেন, চলমান মহামারির কারণে বিদেশে অবস্থানরত অভিবাসী কর্মী অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অথবা বেতন পাচ্ছেন না। বিগত এক মাসে ওকাপ পরিচালিত হেল্পলাইন ডাটাবেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিদেশে অবস্থানরত অভিবাসী কর্মীর প্রায় ৪০ শতাংশ চলমান লকডাউন পরিস্থিতিতে কাজ না থাকা বা বেতন না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আর দেশে টাকা না পাঠানোয় অভিবাসী কর্মীর প্রায় ২৫ শতাংশ পরিবার চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে বা অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, এসব অভিবাসী কর্মী বা পরিবারগুলো সামাজিক অবস্থানের কারণে সরকারি বা বেসরকারিভাবে পরিচালিত কোনও খাদ্য সহায়তা গ্রহণ করতে পারছেন না। আবার হতদরিদ্র বা নিম্ন আয়ের মানুষের দলে না পড়ার কারণে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৫০ লাখ মানুষের জন্য রেশন কার্ডের যে তালিকা তৈরি হচ্ছে, তা থেকেও তাদের বাদ দেওয়া হচ্ছে। কাজেই বিদেশ ফেরত ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসী কর্মী এবং বিদেশে অবস্থানরত অভিবাসী কর্মীর অসহায় পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাদের জন্য ‘সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনী’ ঘোষণার জোর দাবি জানাই। আমরা বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় বরাবর বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় প্রথম সারিতে থাকা অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের খাদ্য নিরাপত্তা, কল্যাণ ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনী প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের জন্য অতিদ্রুত উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ করছি।