১৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | বিকাল ৩:০৮
শ্রীনগরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষেই চলছে কোচিং বানিজ্য!
খবরটি শেয়ার করুন:

শ্রীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ম্যানেজ করে বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষ বরাদ্দ নিয়ে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। সরকারী নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে কোচিং বাণিজ্য চললেও দেখার কেউ নেই। অবৈধ এ কোচিং বাণিজ্যের ফাঁদে পরে অসহায় এখন দরিদ্র অভিবাবকরা।

গত এক সপ্তাহে শ্রীনগর উপজেলার সদরের ১ নম্বর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কামারগাঁও এলাকার চৌধুরী বাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালাশুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, জগন্নাথ পট্রি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঢ়ীখাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ফুলকুচি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ১৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কোচিং চলছে। সকাল ৭ টা থেকে ১২ টা ও বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে অভিন্ন চিত্র। প্রতিটি বিদ্যালয়ের ৪/৫ শ্রেণী কক্ষ ব্যবহার করে দেদারছে চলছে অবৈধ কোচিং বাণিজ্য। এক একটি ব্যাচে রয়েছে ৩০/৪০ জন ছাত্র ছাত্রী। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে একাধিক শিক্ষক কৌশলে সটকে পড়লেও বাকিরা জানান যা কিছু হচ্ছে তা উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে ম্যানেজ করেই হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিবাবকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত এক একটি শ্রেণী ভেদে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ৫শ’ থেকে ৮শ’ টাকা। এতে দরিদ্র অভিবাকরা অসহায় হয়ে পরেছেন।

চৌধুরী বাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গিয়ে দেখা যায়, ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দুলাল মৃধা ও নিতাই চন্দ্র দাস মিলে চারটি কক্ষে কোচিং করাচ্ছেন। সাংবাদিক দেখে শিক্ষক দুলাল মৃধা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বলেন, তিনি ভাগ্যকূল ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি। এখানে তার বাইরে কারো কথা চলবেনা। স্থানীয় অভিবাবকরা জানান, ওই শিক্ষক তার স্ত্রীর দায়ের করা নারী নির্যাতন মামলায় জেল খেটেছেন। তার স্ত্রীও অপর একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করেন। কিন্তু আরেকজন শিক্ষককে পিটিয়ে জেল খাটলেও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের ¯েœহভাজন হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা হয়নি। শিক্ষক নিতাই দাস সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, যা কিছু হচ্ছে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে নলেজেই হচ্ছে। বিদ্যালয়ে কোচিং করানো বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সেলিনা আক্তারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সারা দেশে যা হচ্ছে এখানেও তা-ই হচ্ছে। আপনারা অন্য গুলোর খবর নেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জিএ লতিফ বলেন, রমজানে স্কুল বন্ধ থাকায় পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদেরকে কোচিং করানোর মৌখিক নির্দেশনা রয়েছে। তবে তা বাধ্যতামূলক করে অর্থ নেওয়ার বিষয়টি অনৈতিক।

শিক্ষা অফিসারকে মাসোয়ারা দেওয়ার বিষয়টি কোচিং পরিচালনাকারী একাধিক শিক্ষক স্বীকার করলেও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জামাল উদ্দিন মাসোয়ারা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে তিনি জানান দুর্বল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিনা পয়সায় প্রাইভেট পড়ানোর নির্দেশনা রয়েছে।

error: দুঃখিত!