মুন্সিগঞ্জ, ১৯ মার্চ, ২০২২, শ্রীনগর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কোলাপাড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত প্রভাবশালী ইউপি সদস্য মাহাবুব শাহর অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্যে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
ওই ইউনিয়নের গাবতলা ওয়াসা রোড সংলগ্ন চকের কৃষিজমি ও মানুষের চলাচলের রাস্তার ওপর দিয়ে যত্রতত্রভাবে ড্রেজার পাইপলাইন টানার ফলে এ ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
অপরদিকে ড্রেজার বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে সিন্ডিকেটটি এলাকায় বিরোধে জড়িয়ে পড়ে।
এ নিয়ে মেম্বার মাহাবুব শাহর লোকজন একই এলাকার অপর ড্রেজার ব্যবসায়ী মো. শাহিনুর হাওলাদারের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় শাহিনুর শ্রীনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কোলাপাড়া গাবতলার ঢাকা ওয়াসা সড়কের কালভার্টের নিচ দিয়ে ড্রেজারের ১২ ইঞ্চি পাইপলাইনটি দক্ষিণ কোলাপাড়া রাস্তার ওপর দিয়ে নেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে কবুতরখোলা বাজার থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার কৃষিজমির ওপর দিয়ে যত্রতত্রভাবে ওয়াসা রোডের কালভার্ট পর্যন্ত ড্রেজারের লাইনটি টেনে আনা হয়। এতে ফসলী জমিগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। দীর্ঘ পাইপলাইনের কারণে ধানি জমি পরিচর্যা ও বিভিন্ন কাজকর্মে কৃষক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় কৃষক জানান, ড্রেজারের পাইপ থেকে বালু ও পানি পড়ে জমিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া যত্রতত্রভাবে ড্রেজার পাইপের কারণে আবাদি জমিগুলোতে কাজ করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ড্রেজার ব্যবসায়ীরা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
অপর একটি সূত্র জানায়, কোলাপাড়া ইউনিয়নের নবনির্বাচিত মেম্বার মাহাবুব শাহ ও প্রতিদ্বন্দ্বি ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী যুবলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান জনেট ড্রেজার সিন্ডিকেট ও দক্ষিণ কোলাপাড়ার সাবেক মেম্বার হুমায়ুন মেম্বারের ভাই শাহিনুরের ড্রেজার পাইপলাইন টানা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়।
এ নিয়ে মাহাবুবের লোকজন শাহিনুরকে মারধর করে। তাই উভয় পক্ষ পেশি শক্তি বৃদ্ধিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যেকোন সময়ে ড্রেজার বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
শাহিনুর হাওলাদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অন্য ড্রেজারে কাজ করি। আমি কাজে গেলে মাহাবুব শাহর ড্রেজারের পার্টনার জনেট ও তার লোকজন আমাকে মারধর করে।
ইউপি সদস্য মাহাবুব শাহর কাছে মোবাইলে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারা দেশে এভাবে ড্রেজার ব্যবসা করছে। আমিও করছি। তবে আমার ড্রেজারের ছাড়পত্র নেই।
মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তখন ছিলাম না।
যুবলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান জনেটের কাছে জানতে চাইলে তিনি দাবী করেন, আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপির লোকজন আমাদের ড্রেজার পাইপ ভাঙ্গায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। তবে মারামারির কোন ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয় ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা উত্তম কুমার জানান, আমি বেশ কিছুদিন আগে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ড্রেজারটির বিষয়ে অবহিত করেছি। তবে অসুস্থতার জন্য বর্তমানে ছুটিতে আছি, কাজে ফিরে ঘটনাস্থলে যাবো।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, ড্রেজার সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত চলছে।