মুন্সিগঞ্জ, ১৯ এপ্রিল, ২০২২, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ কমাতে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা নৌপথের জাজিরার মাঝিকান্দি ঘাটে আরেকটি ফেরিঘাট নির্মাণ করা হবে।
২৮ এপ্রিলের মধ্যে নতুন ঘাটটি চালু করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে বিআইডব্লিউটিএ। এ ছাড়া মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে রাতে ফেরি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক গতকাল সোমবার সকালে সাত্তার মাদবর মঙ্গল মাঝির ঘাট পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
এসময় গোলাম সাদেক বলেন, পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাবাজার ঘাটটি যে কোন সময় বন্ধ করে দেওয়া হবে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ মোকাবিলা করার জন্য ওই ঘাট থেকে রাতে কয়েক দিন ফেরি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর বিকল্প জাজিরা ঘাটে আরেকটি ফেরিঘাট নির্মাণ করা হবে ২৮ এপ্রিলের মধ্যে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর জাজিরা-শিমুলিয়া নৌপথের সাত্তার মাদবর মঙ্গল মাঝির ঘাটটিই স্থায়ী ফেরিঘাট হবে। এ কারণে সড়ক প্রশস্ত করা হবে, টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। ঈদের পর এসব অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজে হাত দেওয়া হবে। দুএক দিনের মধ্যেই জাজিরায় নতুন ঘাট নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান। পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার কারণ বিবেচনা করে ওই নৌপথে সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তিনটি ফেরি চলাচল করছে। বিকল্প ঘাট হিসেবে জাজিরার সাত্তার মাদবর, মঙ্গল মাঝির ঘাটে গত বছর ডিসেম্বরে ফেরি চলাচল শুরু হয়।
বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, দুইটি নৌপথ দিয়ে শরীয়তপুর, মাদারীপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন ফেরিতে পারাপার করে। ওই নৌপথে ফেরি চলতে গিয়ে গত বছরের ২০ জুলাই পদ্মা সেতুর একটি পিলারের সঙ্গে রো রো ফেরির ধাক্কা লাগে। এমন পরিস্থিতিতে গত বছরের ১৮ আগস্ট থেকে ওই নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন থেকে শরীয়তপুরসহ দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ চরম বিপাকে পড়ে। এরপর নদীর স্রোত কমে গেলে ওই নৌপথে দিনের বেলা স্বল্পপরিসরে ফেরি চলাচল শুরু হয়। জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সাত্তার মাদবর মঙ্গল মাঝির ঘাট এলাকায় গত বছরের ২৫ আগস্ট নতুন একটি ফেরিঘাট নির্মাণ করে বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ।
নাব্যতা সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ওই পথে ফেরি চালু করা যায়নি। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে ওই নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে নৌপথ দুটিতে দিনে তিনটি এ টাইপের ফেরি, দুটি ডাম্প ফেরি ও একটি ছোট ফেরি চলাচল করছে। বিকেল পাঁচটার পর বাংলাবাজার ঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন সাত্তার মাদবর মঙ্গল মাঝির ঘাটে তিনটি ফেরি চলাচল করে। দিনেরাতে মিলে নৌপথ দুটিতে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। জাজিরার সাত্তার মাদবর মঙ্গল মাঝির লঞ্চঘাটটি ৪০০ মিটার পূর্ব দিকে সরিয়ে সেই স্থানে একটি ফেরিঘাট নির্মাণ করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক গতকাল ঘাটটি পরিদর্শনে আসেন। তখন ঘাটের ইজারাদার, পরিবহন ব্যবসায়ী, স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সভা করেন। সভা শেষে তিনি এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান।