মুন্সিগঞ্জ, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মেঘনা নদীতে মুন্সিগঞ্জ সদর ও চাঁদপুরের সীমানাধীন নাছিরার চরে বালু ও মাটি উত্তোলন নিয়ে দ্বন্দ্বে কিবরিয়া মিজি বাহিনীর গুলিতে জহির বাহিনীর দুইজন নিহত ও একজন গুলিবিদ্ধের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। তবে, বাদীর পক্ষ থেকে অভিযোগ থাকলেও মামলার এজাহারে নাম আসেনি আলোচিত একাধিক ডাকাতি ও হত্যা মামলার আসামি কিবরিয়া মিজির।
বাদীর অভিযোগ, কিবরিয়া মিজির নাম না আসার বিষয়ে চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানা পুলিশ কুটকৌশল অবলম্বন করেছে।
নদীতে জোড়াখুনের আলোচিত ওই ঘটনায় গত মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে চাঁদপুর মতলব উত্তর থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। এই মামলায় জহির ইসলাম ওরফে কানা জহিরসহ ২৪ জনের নাম রয়েছে। আসামি করা হয়েছে গুলিবিদ্ধ আইয়ুব আলীকেও।
এজাহারে উল্লেখিত মামলার বাদি ও নিহত রাসেল ফকিরের মা আনোয়ারা বেগম মামলা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি ও আমার স্বামী পড়াশুনা জানিনা। এ মামলায় কে বা কারা আসামি হবে সেটাও আমাকে জিজ্ঞাসা করেনি পুলিশ। তারা সব কিছু রেডি করে আমাকে একটি কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন। পরে আমি সেই কাগজে স্বাক্ষর করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের অভিযোগ কিবরিয়া মিজি ও তার বাহিনীর লোকজনের বিরুদ্ধে। কিন্ত পুলিশ তাদের নাম বাদ দিয়ে উল্টো গুলিবিদ্ধ আইয়ুব আলী ও জহিরের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে।’
এই নারীর অভিযোগ, ‘আমরা গরিব মানুষ। আমরা কি ছেলে হত্যার বিচার পাবো? তাদের টাকা আছে, ক্ষমতা আছে, তাই তাদের নাম মামলা থেকে বাদ পড়ে।’
এদিকে গুলিবিদ্ধ আইয়ুব আলীর স্বজনরা বলেন, কিবরিয়া বাহিনীর গুলিতে দুইজন নিহত ও আইয়ুব আলী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু পুলিশ অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে অভিযুক্ত কিবরিয়া মিজি, জনি, মিছির বেপারী ও জসিম দেওয়ানের নাম বাদ দিয়ে উল্টো আমাদের নামে মামলা দিয়েছে। এটা অন্যায় ও অবিচার ছাড়া আর কিছুই না।
এ বিষয়ে মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল হকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন গ্রহণ করেননি।
চাঁদপুর পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, ‘শুনেছি অভিযোগটি বাদি নিয়ে এসেছে। মামলাটি মতলব উত্তর থানায় হলেও তদন্ত করবে নৌ পুলিশ। তারা তদন্ত করে দেখবে ঘটনার কে বা কারা জড়িত, সেই অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নিবে।’
চাঁদপুর নৌ পুলিশ সুপার মুসফিকুর রহমানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে কল ধরলেও মিটিংয়ে আছেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
প্রসঙ্গত; গেল ৩০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বালু উত্তোলন নিয়ে দ্বন্দ্বে মেঘনা নদীর মুন্সিগঞ্জ সদর ও চাঁদপুরের সীমানাধীন নাছিরার চরে কিবরিয়া বাহিনী ও তার লোকজনের গুলিতে জহির বাহিনীর সদস্য রিফাত ও রাসেল গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন আইয়ুব আলি নামের একজন।