মু্ন্সীগঞ্জের ৩ স্থানকে অগ্রাধিকার দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হচ্ছে। ১৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সম্ভাব্যতা যাচাই করবে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন। মুন্সীগঞ্জের আড়িয়াল বিলে এটি নির্মাণের পরিকল্পনা বাধার মুখে সাময়িকভাবে বাতিল হলেও এ বিমানবন্দর স্থাপনে বদ্ধপরিকর সরকার। মুন্সীগঞ্জের সম্ভাব্য স্থানগুলো হল: আড়িয়াল বিল (শ্রীনগর), কেয়াইন (সিরাজদিখান) এবং লতব্দি (সিরাজদিখান)।
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে এ সংক্রান্ত প্রকল্প প্রস্তাব পাঠিয়েছে বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে পরিকল্পনা কমিশন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের চেয়েও সুপরিসর ও আধুনিক সুবিধা সংবলিত আরেকটি বিমানবন্দর করতে চায় সরকার। ঢাকার অদূরে সুবিধাজনক জায়গায় এটা করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। এজন্য সম্ভাব্যতা যাচাই, স্থান নির্বাচন ও কী পরিমাণ ভূমি দরকার ইত্যাদি নির্ধারণে ইতিমধ্যে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সিভিল এভিয়েশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে ফের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। উপযুক্ত স্থান নির্বাচনের লক্ষ্যে মোট ৯টি জায়গাকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়। পরে আড়িয়াল বিল (শ্রীনগর-মুন্সীগঞ্জ) ব্যতীত আরও চারটি স্থানকে অগ্রাধিকার স্থান হিসেবে নির্বাচন করেছে মন্ত্রণালয়। এগুলো হল চর জানাজাত (শিবচর, মাদারীপুর), চর বিলাসপুর (দোহার, ঢাকা), কেয়াইন (সিরাজদিখান, মুন্সীগঞ্জ) ও লতব্দি (সিরাজদিখান, মুন্সীগঞ্জ)।
তিনি বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিমানবন্দরটি নির্মাণে পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) নির্দেশ দিয়েছেন। প্রস্তাবিত সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশীয় ও বিদেশী পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হবে।
সূত্র জানায়, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে বিমানবন্দরের জন্য অগ্রাধিকার পাওয়া স্থানগুলোকে সরেজমিন পরিদর্শন করে ঢাকা থেকে দূরত্ব, ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা, জমির পর্যাপ্ততা, আন্তর্জাতিক রুট, সড়ক, রেল ও নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভবিষ্যতে সম্প্রসারণের সম্ভাবনা, পুনর্বাসন, যাতায়াত খরচ ইত্যাদি বিবেচনা করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান হারে যাত্রী ও কার্গো পরিবহন বৃদ্ধি পেলে ২০১৮ সাল নাগাদ হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সর্বমোট প্রায় ৬০ লাখ যাত্রী ও ৪ লাখ কার্গো পরিবহন করবে। পরে ওই বিমানবন্দর বর্ধিত যাত্রী কিংবা কার্গো পরিবহনের ক্ষমতা হারাবে। বেবিচকের সমীক্ষা মতে, ২০২৫ সাল নাগাদ যাত্রী পরিবহনের সংখ্যা হবে প্রায় ১ কোটি এবং কার্গো পরিবহনের পরিমাণ হবে প্রায় ৮ লাখ টন।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সিনিয়র সহকারী প্রধান মিজানুর রহমান মিয়া বলেন, প্রকল্পটি নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে কমিশন। মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তর হতে হলে দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিকল্প নেই। এজন্য আলোচ্য বিমানবন্দরটি স্থাপন করা গুরুত্বপূর্ণ।