৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | রাত ৮:১৮
মুন্সীগঞ্জে জমজমাট এনজিও ‘ব্যবসা’
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সীগঞ্জ জেলায় বিভিন্ন নামের শতাধিক বেসরকারি সংস্থা এনজিও গড়ে উঠলেও এর মধ্যে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তালিকায় রয়েছে মাত্র ৩৬টি। অন্য এনজিওগুলোর কোনো তালিকা নেই জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে। আর এসব প্রতিষ্ঠান নাম ও স্থান পরিবর্তন করে অভিনব কায়দায় নিরীহ মানুষকে প্রতারণা করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জেলার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এর আগে যেসব এনজিও মানবসেবা, ঋণ প্রদান ও চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে, সেসব এনজিও ফের নাম ও স্থান পরিবর্তন করে আগের মতোই প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে। এ ছাড়া নতুন নতুন এনজিওর বিরুদ্ধে প্রকল্পের গম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
সরকারি বিধান অনুযায়ী কোনো জেলায় যে কোনো বেসরকারি সাহায্য সংস্থা এনজিও তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করার আগে জেলা প্রশাসকের পূর্বানুমতি অবশ্যই প্রয়োজন। সর্বোপরি তাদের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পর্কে জেলা প্রশাসককে অবহিত করতে হয়। জেলা পর্যায়ে এনজিও বিষয়ক মাসিক সভায় কী কী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে তার বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিলসহ প্রতিনিধিকে সভায় উপস্থিত থাকতে হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তালিকাভুক্ত ৩৬টিসহ জেলায় শতাধিক এনজিও তাদের নানা কার্যক্রম পরিচালনা করলেও অধিকাংশ এনজিও উলি্লখিত নীতিমালার তোয়াক্কা করছে না। তাদের সরকারি অনুমোদনপত্রও নেই।
সূত্র মতে, গঠিত এনজিওর কমিটিতে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এনজিওটির তিনটি পদেই নিজেদের লোকজন সম্পৃক্ত করা হয়। সাধারণ সম্পাদক কমিটির এবং প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিভিন্ন সাহায্যকারী সংস্থার কাছ থেকে নির্বাহী পরিচালকের নামে পত্র ও অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। যদিও নিয়ম রয়েছে, নির্বাহী কমিটির মাধ্যমে যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহণ ও আয়-ব্যয়ের হিসাব পরিচালনা করার। কিন্তু বেশির ভাগ এনজিও প্রতিষ্ঠান তাদের আত্মীয়-স্বজনদের কোষাধ্যক্ষ বানিয়ে হিসাব পরিচালনা করে।
সূত্র মতে, কতিপয় এনজিও গ্রুপ গঠনের মাধ্যমে ঋণ দিয়ে ১৮ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ হারে সুদ গ্রহণ করছে। ফলে পরিচালকের আর্থিক সমৃদ্ধি বাড়ছে। অন্যদিকে ঋণগ্রহীতারা আরও ঋণের জালে জড়াচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ ফজলে আজিম বলেন, জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ সভায় তালিকাভুক্ত ছাড়া যেসব এনজিও প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে ৬টি উপজেলার ইউএনওকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

error: দুঃখিত!