৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | সকাল ৯:০৮
মুন্সীগঞ্জে আলুর বাম্পার ফলন,দাম নিয়ে হতাশায় কৃষকরা
খবরটি শেয়ার করুন:

এম.এম.রহমান,মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জে আলুর বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে কৃষকরা হতাশায় ভুগছেন । আলুর জন্য বিখ্যাত মুন্সীগঞ্জ জেলায় এবার ৩৮৫৫০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে । গত বছর ৩৭৬০০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছিল । বীজ , কীটনাশক সহ সব ধরনের কৃষি কাজে ব্যবহৃত জিনিসের দাম বেশী হওয়ায় এবার আলু চাষে কৃষকদের গত বছরের তুলনায় এবার উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে । এখন আলু তোলার সময় অতিবাহিত হতে চললেও কৃষকরা আলু তুলতে পারছেনা কারন কোন পাইকার এবার আলু কেনার জন্য আসছেনা । তাছাড়া মুন্সীগঞ্জে আলু সংরক্ষনের জন্য হিমাগারগুলো এখন পর্যন্ত খুলছেনা এতে সাধারন কৃষকরা আলু তুলে রাখবে কোথায় ?এমন ভাবনা নিয়ে জমিতেই আলু ফেলে রেখেছে । আর নির্ধারিত সময়ে আলু না তোলার কারনে বৃষ্টিতে ভিজে আলুতে নানা ধরনের পোঁকায় আক্রমন করে আলু নষ্ট করে ফেলছে । জমিতে উৎপাদনের শতকরা ২০% আলু মড়ক রোগে আক্রান্ত হয়ে পঁচে গেছে ।

সরেজমিনে মুন্সীগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় আলুর জমিতে গিয়ে দেখা যায় , আলুতে এক ধরনের রোগ বেশী দেখা যায় সেটি হল চর্মরোগ কৃষকদের ভাষায় দাঁদ, পোঁকড়া ইত্যাদি রোগে আলু নষ্ট হচ্ছে বেশী । আর বৃষ্টি আসার কারনে আলু তুলতে পারছেনা কুষকরা । বৃষ্টি আসার পর জমি শুকানোর আগে আবার বৃষ্টি চলে আসে এতে কৃষকরা ইচ্ছা করলেও আলু তুলতে পারছেনা ।

আলু চাষী মারফত আলী জানান, এবার আমি ২০ একর জমিতে আলুর চাষ করেছি এবার আমার খরচ বেশী পরেছে । এখন পর্যন্ত কোন পাইকার আলু কেনার জন্য আসছেনা, শুনছি আসবে । তাছাড়া হিমাগারগুলো খুললে কষ্ট করে হলেও হিমাগারে রাখতাম ।

আরেক কৃষক মো: দুলাল বলেন, আলু পাইকারদের মধ্যে একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে তারা এসে দাম বলে চলে যায় , বিক্রি করতে রাজী হলেও না নিয়ে আবার অন্য লোক পাঠিয়ে কম দাম বলে কিন্তু নিচ্ছেনা । যাতে আমরা বাধ্য হই কম দামে তাদের কাছে বিক্রি করতে । তাছাড়া পাইকাররা নগদ টাকায় কেনার চেয়ে বাকীতে নিতে চায় তাতেও দাম এবং টাকা পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে । মুন্সীগঞ্জে এবার যে পরিমান জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে তা বাজারজাত করার মতো স্থান খুঁজে পাচ্ছেনা কৃষকরা । ধার দেনা করে আলু চাষ করে আলু বিক্রি নিয়ে বিপাকে আছে কৃষকরা। সরকার সাধারন কৃষকদের বাঁচাতে আলু বহির্বিশ্বে বাজারজাত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে সরকার এমনটাই দাবী সাধারন কৃষকদের ।

মুক্তারপুরের টংগীবাড়ী হিমাগারের ম্যানেজার আবু সাঈদ জানান, আমরা আমাদের হিমাগার খুঁলে দিয়েছি , আলু আসতে শুরু করেছে ।জাজিরা হিমাগারের ম্যানেজার নুরুল ইসলাম জানান, হিমাগার খুলে দিয়েছি কৃষকদের বৃষ্টির কারনে আলু তুলতে দেরি হয়েছে । তাই আমরা একটু দেড়ি করে খুলেছি ।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক মো: হুমায়ুন এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, গত বছর এ জেলায় ৩৭৬০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল । এবার তা বেড়ে ৩৮৫৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে । এবার উৎপাদনের পরিমান গত বছরের তুলনায় বেশী । আশা করি প্রতি হেক্টরে ৩৫ টন করে আলু পাওয়া যাবে ।

error: দুঃখিত!