১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | রাত ৩:৩৮
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
মুন্সিগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ নৌপথ: কার্গোর চাপে নৌপথে জট
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৬ এপ্রিল, ২০২২, সাজ্জাদ হোসেন (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ রুটে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে ছোট লঞ্চ চলাচল বন্ধ করা হলেও শীতলক্ষ্যা নদীতে বিশৃংখলভাবে নোঙর করে রাখা মালবাহী কার্গো জাহাজের কারণে পুরোপুরি নিরাপদ নয় রুটটি।

এখন এই রুটে একটি সী-ট্রাকে করে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। কিন্তু, মুক্তারপুর ও এর আশেপাশের অঞ্চলে থাকা বিভিন্ন সিমেন্ট কারখানা ও অন্যান্য কারখানার মালবাহী কার্গো জাহাজের জটলা এই রুটটিকে অনিরাপদ করে তুলেছে।

তবে, লঞ্চ মালিকপক্ষ থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্টদের নানামুখী দাবির পরও এসব কার্গোর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ জোনের সভাপতি মোঃ বদিউজ্জমান বাদল জানান, আমরা সিমেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোকে সরাসরি অবগত করেছিলাম। বিআইডব্লিউটিএ’ কেও জানিয়েছি। জেলা প্রশাসকের সাথে মাসিক সভাতেও বলেছি। আমরা সব সিমেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোকেও বলেছি জাহাজগুলোকে মার্কিং করে রাখার জন্য। নদীর মাঝে জাহাজ না রেখে একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখার জন্য অনেকবার বলা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি সভাগুলোতেই এ ব্যাপারে বলা হয়। দীর্ঘদিন এভাবেই লঞ্চগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিমেন্ট কারখানার সাথে সরকারি সংস্থাগুলো কুলিয়ে উঠতে পারেনা। যার কারণে তারা দিনের পর দিন নদীতে জাহাজ রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রেখেছে। তারা এতটাই প্রভাবশালী যার কারণে তাদের কিছুই হয়না।

নিরাপদ নৌপথ চাই ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ৭০ টি লঞ্চ মুন্সিগঞ্জ, চাঁদপুর ও মতলব নৌপথে চলাচল করতো। এছাড়াও বালুবাহী বাল্কহেড, ট্রলারসহ অন্যান্য জলযান চলে। কিন্তু, সিমেন্ট কারখানার কার্গো জাহাজগুলো তারা এলোপাথাড়ি রাখে। মালামাল লোড-আনলোড করা ছাড়াও চোরাকারবারিরা অন্যান্য জাহাজগুলো থেকে তেল ক্রয় করে। নারায়ণগঞ্জ জেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় দীর্ঘদিন বলে আসছি এ সমস্যা সমাধানের জন্য। মুন্সিগঞ্জের প্রশাসনকেও বলা হয়েছে। এ নৌপথ সচল রাখবে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তারা।

তিনি বলেন, তাদেরকে অবগত করলে কর্মকর্তারা জাহাজের জটলা না সরিয়ে তারা জাহাজগুলো থেকে অর্থ আদায় করে তাদের সুযোগ দেয়। নদী তীরবর্তী বসুন্ধরা সিমেন্ট ফ্যাক্টরি থেকে শুরু করে শাহ সিমেন্ট পর্যন্ত এ পথটুকু মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ। এ পথটুকুতে বিভিন্ন কোম্পানির জাহাজ এলোপাথাড়ি নোঙর করে রাখে। বড় বড় জাহাজের মাস্টার-চালকরা নোঙর করে বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। তখন ঐসব জাহাজে থাকে স্টাফরা। জাহাজগুলো যখন আনলোড হয় তখন মাস্টার চালকরা আসে। গ্যাস বহনকারী জাহাজ, অকটেন, ডিজেল, পেট্রোল, বালুবাহী জাহাজ, খাদ্য পণ্যের ট্রলার, মাছবহনকারী ট্রলারসহ বিভিন্ন মালামাল বহনকারী ট্রলার চলাচল করে।

শীতলক্ষ্যা, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী নদী ব্যবহার করে প্রায় ১৪ টি আইটেমের নৌযান চলাচল করে প্রতিনিয়ত। তিন নদীর মোহনায় জাহাজের জটলা না সরানো হলে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

তবে, এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের নৌ নিরাপত্তা বিভাগের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) বাবু লাল বৈদ্য বলেন, আগে জাহাজগুলো নদীর মাঝখানে নোঙর করে রাখতো। কিন্তু, এখন তা করেনা। জাহাজ থেকে মালামাল লোড-আনলোড করা শেষ হলে নদীর কিনারে নিয়ে নোঙর করে।

তবে, নারায়ণগঞ্জ জোনের নৌ-পুলিশের এসপি মিনা মাহমুদ জানান, এ বিষয়ে করণীয় নিয়ে একটি সভায় আলোচনা হয়েছে। আমরা বিষয়টি দেখছি।

error: দুঃখিত!