মুন্সিগঞ্জ, ২৫ জানুয়ারি, ২০২২, সদর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জে দিঘী থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক যুবকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় প্রেস ব্রিফিং করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব জানান, অটোরিকশা চুরির উদ্দেশ্যে পঞ্চসারের গোসাইবাগ এলাকার সাইজউদ্দিন মীরের ছেলে হিমেল মীর (২৩) নামে ঐ যুবককে হত্যা করে বস্তাবন্দী লাশ দিঘীতে ফেলে দেয় অটোরিকশা চুরির সাথে জড়িত একটি চক্র।
হত্যার চারদিন পর পুলিশ বিকৃত অবস্থায় ঐ যুবকের লাশ উদ্ধার করে।
পরে পুলিশ তদন্ত করে হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে গতকাল সোমবার (২৪ জানুয়ারি) মুন্সিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনার সাথে জড়িত আরও একজন পলাতক রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন, প্রধান আসামি মুন্সিগঞ্জ সদরের মুসা সরকার (৪৫), পটুয়াখালী জেলার নজরুল ফরাজী (৩০), পটুয়াখালী জেলার সবুজ চৌকিদার (২৮), মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মোঃ আবুল হোসেন (৪০) ও লৌহজং উপজেলার মোশারফ হোসেন (৩৮)। পলাতক আরেক আসামী মোকসেদ মুন্সিগঞ্জ সদরের বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, নিহত হিমেল মীরের লাশ গত ১৮ জানুয়ারি সকালে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার মুক্তারপুর এলাকার মল্লিক রায় দিঘীর থেকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারের চারদিন আগ থেকে সে নিখোঁজ থাকলেও তার কোন স্বজন তার নিখোঁজের ব্যাপারে কোনো খোঁজখবর করেনি বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ আরও জানায়, লাশ উদ্ধারের পর তদন্তে প্রথমে আসামী মুসা সরকারকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য মতে সহযোগী আসামী নজরুল ফরাজী ও সবুজ চৌকিদারকে গ্রেফতার করা হয়।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গত ১৪ জানুয়ারি অটোরিকশা চুরির উদ্দেশ্যে হিমেল মীরকে তারা হত্যা করে। নিহত হিমেলের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের গোসাইবাগ এলাকায়। সে সাইজউদ্দিন মীরের ছেলে। হত্যার দিন তাকে আসামী মুসার ঘরে নিয়ে কৌশলে নেশা জাতীয় পানীয় পান করায়। একপর্যায়ে হিমেল অচেতন হয়ে গেলে আসামী মুসা সহযোগী আসামীদের নিয়ে হিমেলের অন্ডকোষ চেপে হত্যা করে। পরে হিমেলের হাত পা বেধে বস্তার ভিতরে ঢুকিয়ে রাত একটার দিকে মল্লিক রায় দিঘীতে ফেলে দেয়।
হিমেলকে হত্যার পর তার অটোরিকশাটি লৌহজং থানার বংক্ষীরা এলাকার একটি অটোর গ্যারেজে মোকসেদ ও আবুল হোসেনের কাছে ২২ হাজার টাকায় বিক্রি করে।
আসামীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গ্যারেজ মালিক আবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আসামী আবুল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, অটোরিকশাটি মোশারফ হোসেনের কাছে ৪২ হাজার টাকায় বিক্রি করেন তিনি এবং মোশারফ হোসেন অটোরিক্সার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভাগ ভাগ করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে। মোশারফ হোসেনের কাছ থেকে চুরি যাওয়া অটোরিক্সার চেসিস, তিনটি টায়ার ও একটি মিটার উদ্ধার করা হয়।