১৯শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | সকাল ৯:১২
মুন্সিগঞ্জে ‘সাদা পোশাকে’ ব্যবসায়ীকে আটকের পর ‘মারামারির মামলা’
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর এলাকা থেকে আবু হানিফ (৬৫) নামের এক ব্যবসায়ীকে ‘সাদা পোশাকে’ ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আটকের পর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ‘মারামারির মামলা’য় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুুলিশ।

ওই ব্যবসায়ীর পরিবারের অভিযোগ, কোন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি না হওয়া সত্ত্বেও ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ‘ছাত্র সমন্বয়কের’ তদবিরে তাকে ধরে এনে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

যদিও পুলিশের পক্ষ হতে এই অভিযোগটি অস্বীকার করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আটক আবু হানিফকে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। এর আগে বুধবার রাত ১০ টার দিকে আটক করে তাকে সদর থানায় নিয়ে আসা হয়।

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম সাইফুল আলম মামলার তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনায় মুন্সিগঞ্জ থানায় মোট ৬ টি মামলা হয়েছে। ডেভিল হান্ট অপারেশনের আওতায় তাকে (আবু হানিফকে) গ্রেপ্তার করে আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে তার মধ্যে একটি মামলার আসামি হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’

ওসি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে সে আওয়ামী লীগের লোকজনকে পুনরায় সংগঠিত করার চেষ্টায় অর্থ ব্যয় করেছেন।’

আবু হানিফের ভাগিনা মো. শিপন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মামা একজন ওপেন হার্ট সার্জারি করা। তাছাড়াও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত একজন অসুস্থ রোগী তিনি। নরসিংদী-সলিমগঞ্জ রুটে ছোট লঞ্চের ব্যবসা আছে তার। সম্প্রতি ঐ রুটের একজন মালিক ছাত্র সমন্বয়কের মাধ্যমে লঞ্চের টাইম টেবিল পরিবর্তনের চেষ্টা করেন। কিন্তু, তা করতে না পেরে সমন্বয়কের তদবিরে আবু হানিফকে আওয়ামী লীগের দোসর ট্যাগ দিয়ে মামলা দেওয়া হয়েছে।’

আবু হানিফের পক্ষে মনিরুজ্জামান উজ্জল নামে এক ব্যক্তি ‘প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমন্বয়ক ও সহকর্মী গণমাধ্যমকর্মীর দৃষ্টি আকর্ষণ’ শিরোনামে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে অভিযোগ করেছেন, ‘বুধবার রাত আনুমানিক ১০টা। মুন্সিগঞ্জের তালতলার মালখানগরের একটি বাড়িতে সাদা পোশাকে কয়েকজন নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে দরজায় টোকা দেয়। এ সময় ৬২ বছর বয়সি আবু হানিফ নামে একজনকে কিছু কথা বলে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় নিয়ে যায়।’

তিনি লিখেন ‘ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে পুরোনো মামলায় নাম অন্তর্ভুক্ত করলেন তিনি কি জানেন প্রকৃতির প্রতিশোধ বলে কথা আছে? অন্যায় ভাবে কাউকে ফাসালে এর দায় কোন না কোন ভাবে তাকে পরিশোধ করতে হবে। যে সমন্বয়ক কারো পক্ষে তদবির করলেন তিনি কি জানেন তার বাবার বয়সী মানুষটি ওপেন হার্ট সার্জারি উচ‌‌‌চডায়াবেটিক , উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানি সহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। তিনি কোন প্রকার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ভাই, আপনি প্রায়ই বলেন কোন নিরপরাধ যেন শাস্তি না পায়। পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে একটু কথা বলে দেখবেন নাকি কিভাবে একজন নিরপরাধকে এ মামলায় জড়ানো হলো। পুলিশ কি মামলা দায়েরের আগে তার সম্পর্কে আদৌ তদন্ত করে দেখেছেন তিনি ছিলেন কিনা।’

এ ব্যাপারে মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, ‘কোনো সমন্বয়কের কথায় নয়, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডেভিল হান্ট অপারেশনের আওতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

error: দুঃখিত!