রাজধানী ঢাকার কাছেই মুন্সিগঞ্জের নাটেশ্বরে মাটি খনন করে একটি বিশাল মন্দির কমপ্লেক্সের সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। কয়েক বছর ধরে সেখানে বাংলাদেশ ও চীনের প্রত্নতাত্ত্বিকরা যৌথভাবে খনন কাজ পরিচালনা ও গবেষণা করছেন।
খননকার্যের নেতৃত্বে থাকা ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সবশেষে পাওয়া মন্দির কমপ্লেক্সটির চারদিকে চারটি বড় হলঘর রয়েছে। এসব হলঘরে রয়েছে প্রায় স্তূপ ধরনের ১৬টি পিলার। আর মাঝে রয়েছে মূল মন্দিরের অংশ বিশেষ।
তিনি জানান, মন্দির কমপ্লেক্স থেকে প্রাপ্ত উপকরণ যুক্তরাষ্ট্রের বেটা ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষার জন্যে পাঠানো হয়েছিল।সব পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তারা নিশ্চিত হয়েছেন যে এসব স্থাপনা হাজার বছরের প্রাচীন।
মোস্তাফিজুর রহমান আরও জানান, ২০১০ সাল থেকে বিক্রমপুর অঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ ও খনন শুরু হয় এবং নয়টি স্থানে প্রাচীন মানববসতির চিহ্ন পাওয়া যায়। পরে রঘুরামপুরে বিক্রমপুরী বৌদ্ধ বিহারে সাতটি বৌদ্ধ ভিক্ষু কক্ষ আবিষ্কৃত হয়।
২০১২ সালে নাটেশ্বরে প্রায় দশ একর জায়গাজুড়ে শুরু হয় খনন কাজ। পরে এই কাজে যোগ দেন চীনের প্রত্নতাত্ত্বিকরা। সম্প্রতি এসব স্থানে পাওয়া যায় নানা ধরনের মৃৎপাত্র। এছাড়া সম্প্রতি আবিষ্কৃত হয়েছে আর দু’টি স্তূপ হল যার প্রতিটিতে চারটি করে স্তূপ রয়েছে।
এছাড়া প্রকৌশলগত দিক থেকে অসাধারণ একটি ইট-নির্মিত রাস্তাও পাওয়া গেছে যার ৩০ মিটার খনন সম্ভব হয়েছে ইতোমধ্যেই। এছাড়া নাটেশ্বরেই গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন বিশেষ স্থাপত্য কাঠামোর অষ্ট-কোণাকৃতি একটি স্তূপ।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জায়গাটি বাঙ্গালি বৌদ্ধ পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্করের জন্মভূমি। তাই এখানে অতীশ দীপঙ্করের সমসাময়িক বৌদ্ধবিহার, বৌদ্ধ মন্দির, বৌদ্ধ স্তূপ ও রাস্তার আবিষ্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সূত্র: বিবিসি বাংলা