১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
মঙ্গলবার | দুপুর ১:৪০
মুন্সিগঞ্জে আ. লীগের দুই প.ক্ষের সং.ঘ.র্ষে গু.লি.বি.দ্ধ ৬
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ২৪ জুন ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধের জেরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৯ জন। এর মধ্যে ৭ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আহতরা হলেন– হারুন গ্রুপের হারুন অর রশিদ (৩৫), রনি (৩৪), আক্তার (৪০), মুক্তার (৪২), আনন্দ (২৫), হাসিব (২২) শাহিনূর বেগম (৫৫) এবং শাহ পরান গ্রুপের রিয়াদ হোসেন (২৪) ও আক্তার হোসেন (৪০)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হোসেন্দী ইউনিয়নের শাহ পরান গ্রুপের সঙ্গে প্রতিপক্ষ হারুন অর রশিদ গ্রুপের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শাহ পরান মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহর পক্ষে অবস্থান নেন। অন্যদিকে হারুন অর রশিদ গ্রুপের লোকজন অবস্থান নেন আমিরুল ইসলামের পক্ষে।

নির্বাচনে আমিরুল ইসলাম পরাজিত এবং মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ জয়লাভ করায় চাপে ছিল হারুন গ্রুপের লোকজন। এর মধ্যে গতকাল রোববার আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার জের ধরে আজ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গোয়ালগাঁও গ্রামের দিলা মিয়ার মুদি দোকানের সামনে সংঘর্ষে জড়ায় উভয় পক্ষ। এতে হোসেন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩ নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি হারুন অর রশিদসহ তাঁর সমর্থক রনি (৩৪), আক্তার (৪০), মুক্তার (৪২), আনন্দ (২৫) ও হাসিব (২২) গুলিবিদ্ধ হন।

হামলার খবর পেয়ে হারুনের চাচি শাহিনূর আক্তার এগিয়ে আসলে তাঁকেও মারধর করা হয়। অন্যদিকে শাহ পরান গ্রুপের রিয়াদ ও আক্তার হোসেন নামে দুজন আহত হয়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। আহতদের মধ্যে ৭ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং দুজনকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

হামলায় আহত হোসেন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি, রোববার আমরা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম এটা কি আমাদের অপরাধ? এই ঘটনার জের ধরে শাহ পরানের নেতৃত্বে অন্তত ২৫/২৬ জন আমাদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। তাঁদের সবার হাতে পিস্তলসহ বিভিন্ন রকম অস্ত্র ছিল। তাঁরা আমাদের লক্ষ্য করে একের পর এক গুলি ছুড়তে থাকে। আতঙ্কিত হয়ে আমরা এদিক–ওদিক ছোটাছুটি শুরু করলে আমাদের ছয়জনের গায়ে গুলি লাগে।’

বিষয়টি সম্পর্কে অভিযুক্ত শাহপরান বলেন, ‘তাঁরা মিথ্যাচার করছে। ঘটনার সময় আমি এলাকাতেই ছিলাম না, আমি এখনো এলাকার বাইরে। শুনেছি এলাকায় টুকটাক গ্যাঞ্জাম হয়েছে। আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী সামান্য আহত হয়েছে।’

গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের পর বিভিন্ন এলাকায় আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। আজকেও আমার একনিষ্ঠ কর্মী হারুন ও তাঁর পরিবারের সদস্যের ওপর হামলার ঘটনা ঘটল। আমি এই ঘটনার নিন্দা জানাই এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজিব খান বলেন, ‘খবর পাওয়ার পর পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছে কিনা আপাতত বলতে পারছি না। বিস্তারিত পরে বলা যাবে।’

error: দুঃখিত!