১৩ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বৃহস্পতিবার | রাত ১০:৪৬
মুন্সিগঞ্জে অসুস্থ বোন জামাইয়ের সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ২৯ অক্টোবর, ২০২২, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

অসুস্থ বোন ও তার স্বামীর ৯৫ শতাংশ জমি অবৈধ ভাবে কৌশলে পাওয়ার নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বড় ভাই আনিসুর রহমান সরকারের বিরুদ্ধে।

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ থানা ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী বাচ্চু মিয়া।

বাচ্চু মিয়া দক্ষিণ চরমসুরা এলাকার আব্দুর রেজ্জাক মাদবরের ছেলে।

অভিযুক্ত আনিসুর রহমান সরকার সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের নুরদ্দিন সরকারের ছেলে এবং সদর উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সামসুল হক সরকারের বড় ভাই।

ভুক্তভোগী ও অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, বাচ্চু মিয়া দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন। ২০২০ সালে প্রবাস থেকে দেশে আসার পরে তিনি স্ট্রোক করেন। এতে তার এক পা, এক হাত প্যারালাইজড হয়ে যায়। কয়েক মাস হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় তাকে। সে সময় চিকিৎসা ও সংসার চালাতে গিয়ে অর্থ সংকটে পরে বাচ্চুর পরিবার। সে সুযোগটা কাজে লাগায় বাচ্চুর স্ত্রী, নুরজাহান বেগমের বড় ভাই আনিস সরকার। তাদের ভুল বুঝিয়ে চরমসুরা মৌজার আর এস ৪২১৫, ৪২০৮, ৪২১৬ দাগ থেকে ২০২১ সালের ২৩ মে আনিস সরকার ৯৫ শতাংশ জমির পাওয়ার নেন।

ভুক্তভোগী বাচ্চু মিয়া বলেন, আমার কাছ থেকে যে জমি গুলো নেওয়া হয়েছে সেগুলোর দাম কম করে হলেও ৪০-৪৫ লাখ টাকা হবে। আনিস জমি বিক্রি করে আমাকে টাকা পরিশোধ করার কথা বলেছিল। ভোগ-দখলে জায়গা কৌশলে নেয় সে। সেখান থেকে গত এক বছরে দুই ব্যাক্তির কাছে আনিস ৭৬ শতাংশ জমি বিক্রি করে দিয়েছে। অবশিষ্ট দামি জমি আনিস সরকার তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগমের নামে করে দিয়েছে। আমরা টাকা চাইতে গেলে আমাদের কে মারধর, গালিগালাজ এবং ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। টাকা কিভাবে নিব সেটি দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে আনিস।

বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী নুরজাহান বেগম বলেন, সংসারে আয়-রোজগারের কেউ নেই। অসুস্থ শাশুড়ি, স্বামী, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া একটি ছেলেকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। এই জায়গা বিক্রির টাকা আমাদের শেষ ভরসা ছিল। সেটিও আমার ভাই আনিস সরকার আত্মসাতের চেষ্টা করছে। আমরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। সে জন্য বিভিন্নভাবে হামলা-মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে। সংসারের এই দুঃসময়ে আমরা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমাদের জমি অথবা জমি বিক্রির টাকা চাই, নয়তো রাস্তায় নামা ছাড়া উপায় থাকবে না।

অভিযোগের বিষয়ে আনিস সরকারের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর মুঠোফোনে তার বক্তব্য চাইলে তিনি ব্যস্ততার অযুহাতে ফোন কেটে দেন। পরে কয়েকদফায় তাকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

এ ব্যাপারে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবির ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাচ্চু মিয়ার পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়। মানবিক দিক বিবেচনা করে বাদি-বিবাদি উভয়কে কাগজপত্র ও সাক্ষ্য-প্রমাণ নিয়ে ডিবি অফিসে আসতে বলি। বাদীপক্ষ হাজির হলেও আনিস সরকার আসেনি। তার মুঠোফোনটিও বন্ধ রাখেন।

error: দুঃখিত!