মুন্সিগঞ্জ, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
বুড়িগঙ্গা নদীতে মুন্সিগঞ্জের যাত্রী নিয়ে মুন্সিগঞ্জের কাঠপট্টি থেকে ছেড়ে যাওয়া মর্নিং বার্ড ডুবিতে প্রাণহানির মামলায় ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক মোসাদ্দেক হামিদ ছোয়াদসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদরঘাট নৌ থানার এসআই শাহিদুল আলম মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন বলে এ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল কবীর বাবুল জানান।
অভিযোগপত্রভুক্ত অপর আসামিরা হলেন- ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক মোসাদ্দেক হামিদ ছোয়াদ, লঞ্চের মাস্টার আবুল বাশার মোল্লা, সহকারী মাস্টার জাকির হোসেন, চালক শিপন হাওলাদার, শাকিল হোসেন সিপাই, সুকানি নাসির মৃধা, মো. হৃদয় হাওলাদার, সুপারভাইজার আব্দুস সালাম, সেলিম হোসেন হিরা, আবু সাঈদ ও দেলোয়ার হোসেন সরকার।
গতবছরের ২৯ জুন ঢাকার শ্যামবাজারের কাছে বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চডুবিতে ৩৪ জনের মৃত্যুর ওই ঘটনা পুরো দেশকে নাড়িয়ে দেয়। এই ৩৪ জনের সবাই ছিলো মুন্সিগঞ্জের।
এমএল মর্নিং বার্ড নামের ওই লঞ্চটি মুন্সিগঞ্জের কাঠপট্টি থেকে যাত্রী নিয়ে সদরঘাটের দিকে আসছিল। সকাল সোয়া ৯টার দিকে শ্যামবাজারের কাছে নদীতে ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় সেটি ডুবে যায়।
আকারে বহুগুণ বড় লঞ্চ ‘ময়ূর-২’ এর ধাক্কায় ছোট লঞ্চ ‘এমএল মর্নিং বার্ড’ কেমন করে মুহূর্তের মধ্যে বুড়িগঙ্গায় ডুবে গিয়েছিল, সেই দৃশ্য ধরা পড়ে সদরঘাটের একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে।
সেই ভিডিও দেখে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সে সময় বলেন, “যেভাবে ঘটনা ঘটেছে, আমার মনে হয়েছে এটা পরিকল্পিত। এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড।”
‘অবহেলাজনিত মৃত্যু’ ঘটানোর অভিযোগ এনে ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক, মাস্টারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ওইদিনই মামলা করেন নৌ-পুলিশ সদরঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শামসুল। তদন্তে নেমে পুলিশ মোসাদ্দেক হামিদ ছোয়াদসহ আট জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের কয়েকজন জামিনও পান।
ওই ঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি প্রাণহানির পেছনে নয়টি কারণ চিহ্নিত করে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে ২০ দফা সুপারিশ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় মর্নিং বার্ড ডুবে গেছে এটা ‘নিশ্চিত’। তবে যেহেতু এ ঘটনায় মামলা হয়েছে, তাই দায়ী কে তা তদ্ন্ত করে বের করা হবে।