মুন্সিগঞ্জ, ১৩ মে, ২০২০, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে দীর্ঘ বিরতির পর ঈদ সামনে রেখে সরকারের নির্দেশনায় মুন্সিগঞ্জের দোকান-পাট, মার্কেট-শপিংমল খুললেও দোকানদাররা স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে না পারায় বুধবার থেকে মুন্সিগঞ্জের মার্কেট বন্ধ ঘোষনা করে জেলা প্রশসন।
এদিকে মার্কেট বন্ধের ঘোষনায় মুন্সিগঞ্জের ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। বুধবার মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও দোকানদারদের সাথে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা যায়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এড়াতে গত ২৪ মার্চ থেকে সারা দেশের মত মুন্সিগঞ্জেও সব দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়। এরপর প্রায় ২ মাসেরও বেশি সময় ধরে এসব দোকানপাট ব্যবসায়ী ও তাদের কর্মচারীরা বেকার হয়ে পড়ে। ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে হঠাৎ মার্কেট খুলতে সরকারের নির্দেশনা আসলে তাতে আশার সঞ্চার হয় ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের মাঝে।
অনেক ব্যবসায়ী ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসার আশায় নতুন করে টাকা বিনিয়োগ করেছেন এখন তাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
অন্যদিকে দোকান কর্মচারীরা দীর্ঘদিন বেকার থাকার পরে রোজগারের আশায় রবিবারই কাজে যোগ দিয়েছিলেন। তারাও এখন পড়লেন অনিশ্চিয়তায়।
মুন্সিগঞ্জের রিকাবীবাজারের একটি কাপড়ের দোকানের কর্মচারী কাউসার (১৭) বলেন, ‘প্রায় দুই মাস ধরে আমাার মালিকের দোকান বন্ধ। আমার বেতনও বন্ধ। তার ছোট দোকান। তিনি যে আমাকে চালিয়ে রাখবেন সেই অবস্থাও নেই। অন্যদিকে আমার পরিবারের অবস্থাও খুব খারাপ। এখানে ৪ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতাম। ঈদ তো দূরে থাক, সামনের কয়দিন কি খাবো সেই চিন্তায় আছি।’
মুন্সিগঞ্জ শহরের একটি কসমেটিকস দোকানদার বলেন, ‘আমার দোকানে ৪ জন স্টাফ কাজ করে। তাদের বেতন দিতে পারি না দুই মাস ধরে। দোকানও দিয়েছি নতুন। তাই জমানো টাকা নেই। যা টাকা ছিলো সব এই দোকানেই বিনিয়োগ করা। মার্কেট খোলায় ২ দিন ভালোই বিক্রি হয়েছিলো তবে এখন ভয়ে আছি। দোকান বন্ধ করে দিয়েছি। কর্মচারীদের ৫০০ করে টাকা দিয়েছি। এটা দিয়ে তাদের জানিনা কি হবে। নিজের পরিবারের চিন্তা করার উপায়ই নেই।’
মুন্সিগঞ্জ জেলায় দোকান-মার্কেট মালিক এবং দোকান কর্মচারীদের কোন সংগঠন নেই। তাদের সকলের পক্ষে কথা বলার বা তাদের সকলের কথা তুলে ধরারও কেউ নেই। যার কারনে তাদের জন্য কোন প্রণোদনা বা সহায়তারও কোন উদ্যোগ নেই। মুন্সিগঞ্জ শহর, সিপাহীপাড়া, রিকাবীবাজার মিলে ছোট-বড় দোকান আছে প্রায় ৫-৭ হাজার। আর পুরো জেলায় আনুমানিক দোকানের সংখ্যা লক্ষাধিক। এসব দোকানের সাথে জড়িত কর্মচারীরা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।