১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | ভোর ৫:০৭
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
বেঁচে আছেন বাবা, দাফন হয়েছে স্ত্রী ও ছেলের
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ২১ মার্চ, ২০২২, সদর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় মুন্সিগঞ্জগামী লঞ্চ এম এল আশরাফ উদ্দিন দূর্ঘটনার ঘটনায় প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার রমজানবেগ এলাকার দীন ইসলামের বাবা আব্দুর রব। তবে লঞ্চে থাকা নিখোঁজ স্ত্রী ও ছেলের লাশ পেয়েছেন রাতেই।

রাত দেড়টার দিকে স্থানীয় সামাজিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।

আজ সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে দিন ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সেখানে চলছে শোকের মাতম।

শ্বাসকষ্টের রোগী আব্দুর রব গতকাল রাতেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন৷ দুপুরে তার বাসায় গিয়ে দেখা গেল বিছানায় কাতরাচ্ছেন শোকে বিহ্বল আব্দুর রব। সাথে থাকা পুত্রবধূ ও নাতি কে বাঁচাতে না পারার আক্ষেপ করছিলেন তিনি।

গতকাল শ্বাসকষ্টের ডাক্তার দেখাতে পুত্রবধূ ও নাতি কে নিয়ে নারায়ণগঞ্জে গিয়েছিলেন। বেলা ২ টা’র দিকে তারা নারায়ণগঞ্জ লঞ্চঘাট থেকে মুন্সিগঞ্জগামী এম এল আশরাফ উদ্দিন লঞ্চে উঠেন। লঞ্চটি পথিমধ্যে নারায়ণগঞ্জের কয়লাঘাট এলাকায় তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু এলাকায় সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন কার্গো রুপসী-৯ এর ধাক্কায় অর্ধশত যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। এ ঘটনায় আজ বিকাল ৩ টা পর্যন্ত ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

ডুবে যাওয়ার সময় মুন্সিগঞ্জের রমজানবেগ-খাসকান্দি এলাকার দীন ইসলাম (৪৫) এর বাবা আব্দুর রব (৬৫), স্ত্রী আরিফা (৩২) ও তার ছেলে সাফায়েত (দেড় বছর) লঞ্চের নিচতলায় ছিলেন।

লঞ্চটি ডু্বে যাওয়ার উপক্রম হলে আব্দুর রব তার পুত্রবধূ ও নাতিকে হাত চেপে ধরে রাখেন। কিন্তু পানির ঝাপটায় মুহুর্তেই তারা দূরে ছিটকে পড়েন। এরপর আব্দুর রব পানিতে ডুব দেন। কিছুক্ষণ পর ভেসে উঠে প্লাষ্টিকের গ্যালেন ধরে ভেসে থাকার চেষ্টা করেন। এসময় জ্ঞান হারান তিনি। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নদী তীরে নিয়ে আসেন।

সেখান থেকে পরিবারের স্বজনরা খোঁজ পেয়ে তাকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। তখনও নিখোঁজ ছিলেন পুত্রবধূ ও নাতি। পরে রাত ১০টা’র দিকে তাদের লাশের খোঁজ পাওয়া যায়।

দিন ইসলামের পরিবারে স্ত্রী ও ছেলে সাফায়েত ছাড়াও মাহিম (১৩) ও রেখা (১৮) নামে এক ছেলে ও মেয়ে সন্তান রয়েছে।

দিন ইসলাম বলেন, বারবার লঞ্চ ডুবছে, কিন্তু কেউই ন্যায়বিচার পাচ্ছে না। এভাবে আর কতবার? এত বড় বড় নেতা তারা কি করে? আমি এর কঠিন বিচার চাই।

লঞ্চ ডুবিতে উদ্ধারকৃত মরদেহের যাদের নাম-পরিচয় জানা গেছে তারা হলেন, মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার রমজানবেগ এলাকার দ্বীন ইসলামের স্ত্রী আরিফা বেগম ও দুই বছরের শিশু সন্তান সাফায়েত। এছাড়া শহরের উত্তর ইসলামপুরের ড্রেজার ব্যবসায়ী জয়নাল ভূঁইয়া, গজারিয়া উপজেলার ইসমানিচর গ্রামের স্মৃতি রানী রাজবংশী। স্মৃতি রানী মুন্সিগঞ্জ সরকারি হরগঙ্গা কলেজের এইচএসসি পরিক্ষার্থী ছিল। তবে এখনও নিখোঁজ রয়েছে ছোট বোন ৩ বছরের আরোহী রানী রাজবংশী।

error: দুঃখিত!