৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | বিকাল ৫:০৩
বিয়ের আগে মেয়েদের মোবাইল ব্যবহার কমানোর পরামর্শ প্রতিমন্ত্রীর
খবরটি শেয়ার করুন:

বিয়ের আগে মেয়েদের মোবাইল ফোনের ব্যবহার সীমিত রাখতে অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।

এছাড়া মেয়েরা কলেজে উঠলে তাদের জন্য আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা করারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। প্রতিমন্ত্রীর মতে, এ থেকে এড়ানো যাবে ‘সমস্যা’, যা থেকে বাল্য বিয়ে হয়ে থাকে।

মেয়েদের বিয়ের বয়স কমানোর প্রস্তাব করে সমালোচনার মুখে থাকা মেহের আফরোজ চুমকি বুধবার বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ নিয়ে একটি আলোচনা সভায় কথা বলেন।

তবে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর থেকে না কমানোর কথা বলেন তিনি।

বাল্য বিয়ে বিলম্বিত করার লক্ষ্যে নতুন চালু করা বালিকা প্রকল্পের ফলাফল তুলে ধরতে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল এনজিও পপুলেশন কাউন্সিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেখা গেছে, মেয়েদের শিক্ষা সহায়তা বিশেষত ইংরেজি ও অঙ্ক শিক্ষা দেওয়া গেলে মেয়েদের বিয়ে বিলম্বিত হয়।

এছাড়া মেয়েদের লৈঙ্গিক অধিকার ও সমঝোতা, গভীর চিন্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ব্যবসায়িক উদ্যোগ, মোবাইল মেরামত, ফটোগ্রাফি ও ফার্স্ট এইড বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েও ফল পাওয়া যায় বলে এতে উঠে এসেছে।

বাংলাদেশে তিন জন মেয়ের মধ্যে দুই জনের ১৮ বছরের আগে বিয়ে হওয়ায় বাল্যবিয়ে কীভাবে বিলম্বিত করা যায় তা বের করতে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করে নেদারল্যান্ডস দূতাবাস।

বাংলাদেশে বাল্য বিয়ের পিছনে দারিদ্র্য, যৌতুক, যৌন নিপীড়ন ও নিরাপত্তাহীনতা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলো রয়েছে।

অভিভাবকদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন,“আপনারা যদি সচেতন হন তাহলে সমস্যা এড়াতে পারবেন।”

তিনি বলেন,মেয়েরা স্কুল ও কলেজে ছেলেদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করবে-এটা এখন স্বাভাবিক।

“মোবাইলের কারণে এটা (ছেলেদের সঙ্গে বন্ধুত্ব) এখন আগের চেয়ে সহজ হয়ে গেছে। যেহেতু তাদের যৌনতা ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে জ্ঞান তৈরি হয়নি তাই তারা যে কোনো সময় বিপদে পড়তে পারে।

“আমরা সব সময় বাল্য বিয়ে নিয়ে কথা বলি। কিন্তু বিয়ের আগে মেয়েদের সন্তান নেওয়ার সংখ্যা জানাটাও জরুরি।”

প্রতিমন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশের চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থা ‘ভালো’ বলে তিনি মনে করেন।

“তবে এ ধরনের সমস্য যেন নতুন করে না আসে সে বিষয়ে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।”

খুব প্রয়োজন না হলে শিশুদের মোবাইল ফোন না দিতে অভিভাবকদের পরামর্শ দেন তিনি।

কলেজপড়ুয়া মেয়েদের জন্য আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন,“স্কুল সাধারণত বাসার কাছাকাছি হয়। তবে কলেজ বাড়ি থেকে দূরে হয়। এটা একটা বড় সমস্যা।

“১৫ বা ১৬ বছরের মেয়েরা যখন কলেজে যেতে চায় তখনই সমস্যা শুরু হয়। সে হেঁটে বা রিকশায় বা অন্য কোনো গাড়িতে যায় এবং এই সময়ে তাদের অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।

“তাদের সবাইকে পাহারা দেওয়ার মতো এতো পুলিশ আমাদের নেই। সব সময় সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। এলাকার লোকজন মেয়েদের কলেজে যাওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারে।

“তা না হলে অভিভাকরা তাদের কলেজে পাঠাতে না চাইবে না। এবং তখন তারা বাসায় থাকবে এবং শেষ পর্যন্ত বিয়ে হবে যাবে।

“আমরা যদি এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে পারি তাহলে বাল্য বিয়ের হার কমে আসবে।”

error: দুঃখিত!