৮০ বছর ধরে গিরিডিতে বন্ধ এই সিন্দুক। একটি তিন ফুট লম্বা, দুই ফুট চওড়া ও দেড় ফুটের মতো লোহার সিন্দুক। ১৯৩৭ সালে মালিকের মৃত্যুর পর থেকে সিন্দুকটি বন্ধ। খোলাই হয়নি। খুললে ওই সিন্দুক থেকে হয়তো বেরিয়ে আসতে পারে কোনো অমূল্য সম্পদ। হয়তো বেরিয়ে আসতে পারে কোনো সমৃদ্ধ বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র!
কারণ সিন্দুকটির মালিকের নাম যে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু।ভারতের ঝাড়খন্ডের গিরিডিতে জগদীশচন্দ্র বসু সংগ্রহশালায় সিন্দুকটি রাখা আছে সেই ১৯৩৭ সাল থেকে। জেলা প্রশাসক উমাশঙ্কর সিংহ থেকে শুরু করে জেলার তথ্য কর্মকর্তা শিবকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলার শিক্ষা অফিসার মেহমুদ আলমসহ সবাই এক কথায় স্বীকার করে নিচ্ছেন, এত দিন ধরে ওই সিন্দুকের মধ্যে কোনো মূল্যবান কাগজপত্র পড়ে থাকলে তা নষ্টও হয়ে যেতে পারে। তাই দ্রুত ওই সিন্দুক খোলা জরুরি। কিন্তু প্রশ্ন, কে খুলবে ওই সিন্দুক?
শিবকুমারের কথায়, ‘বিশ্ববিখ্যাত এই বাঙালি বিজ্ঞানীর ঐতিহাসিক সিন্দুক যে কেউ খুলে ফেলুক, তা আমরা চাইনি। তাই ঠিক করেছিলাম, সিন্দুকটি খুলবেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম। তাঁকে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছিল। তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণও করেছিলেন। কিন্তু অনিবার্য কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি।’
জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, ২০০২ সালের জুন মাসে আবদুল কালাম বোকারোয় আসেন। তখন ঠিক হয় বোকারোর অনুষ্ঠানের পরে তিনি গিরিডি যাবেন ওই সিন্দুক খুলতে। কিন্তু যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে গিরিডির উদ্দেশে আর কালামের হেলিকপ্টার ওড়েনি। এর পরও জগদীশচন্দ্রের সিন্দুক খুলতে ও সংগ্রহশালাটি ঘুরে দেখতে আসার কথা ছিল কালামের। কিন্তু কোনো কারণে সেই অনুষ্ঠানও বাতিল হয়ে যায়। সম্প্রতি মারা গেছেন কালাম।
প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি সিন্দুক খোলার পরিকল্পনা আরো পিছিয়ে গেল? জেলা প্রশাসক উমাশঙ্কর সিংহ বলেন, ‘কালাম যদি সিন্দুকটি খুলতেন তাহলে খুবই ভালো হতো। তবে তিনি যখন আর নেই তখন অন্য ব্যবস্থা করতে হবে।’
ওই সংগ্রহশালার দায়িত্বে আছেন জেলার শিক্ষা অফিসার মেহমুদ আলম। তিনি বলেন, ‘দুইবার তো চেষ্টা হলো। এবার নতুন করে আবার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে।’ ১৯৩৭ সালে গিরিডির শান্তি নিবাসেই মারা যান জগদীশচন্দ্র বসু।
সূত্র : আনন্দবাজার।