২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রবিবার | রাত ৩:২১
প্রথমবার বিমানে চড়তে করতে হবে এই ৬ টি বিষয়
খবরটি শেয়ার করুন:

মানুষ সাধারণত তার প্রথম ফ্লাইটের অভিজ্ঞতা ভোলে না। আর সেইসব অভিজ্ঞতা খুবই চমৎকার। আপনি যদি বিমানে চড়া নিয়ে কোন ভীতিতে ভোগেন তাহলে সেটা আজই ঝেড়ে ফেলুন। প্রথমবার বিমানে চড়া আপনার সারা জীবনের জন্য নিঃসন্দেহে একটি আনন্দময় স্মৃতি হয়ে থাকবে। মাত্র ৬ টি ধাপে আপনি এড়াতে পারেন বিমান ভ্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় ভোগান্তি আর নিশ্চিন্তে উপভোগ করতে পারেন আপনার যাত্রা।

এই ৬ টি পদক্ষেপ অনুসরণ করুন-

১। আপনার টিকেট বুক করুন
বিমানে চড়ে কোথাও যেতে হলে সর্বপ্রথমে টিকেট বুক করুন। আপনি যেদিন যে সময় যেতে চাইছেন প্লেনের শিডিউলের সাথে মিলিয়ে সেই দিনের টিকেটের জন্য যোগাযোগ করুন। সীট না থাকলে আপনি টিকেট পাবেন না। তাই আগে থেকে যোগাযোগ করাই ভাল। এর দুইটি সুবিধা আছে। এক, নিশ্চিত টিকেট পাও্য়া, দুই, কম দামে বা ডিসকাউন্টে টিকেট পাওয়া। আপনি ট্রাভেল এজেন্টদের মাধ্যমে অথবা অনলাইনে টিকেট কিনতে পারেন।

২। ফ্লাইটের জন্য প্রস্তুতি
এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার আগে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র নিয়েছেন কিনা দেখে নিন। যেমন, পাসপোর্ট, ভ্রমণ সঙ্ক্রান্ত কাগজপত্র, ভিসা ইত্যাদি। দেশের অভ্যন্তরে হয়ত আরো কম কাগজপত্র দরকার হবে। আপনাকে বিভিন্ন নিয়মের মধ্য দিয়ে যেতে হব আর এতে কিছু সময়ও লাগবে। তাই দ্রুত এয়ারপোর্ট পৌছে যাওয়াই ভালো। যারা দেশের বাইরে ভ্রমণ করবেন অন্তত ৩ ঘন্টা আগে এয়ারপোর্টে পৌছান। দেশের অভ্যন্তরে হলে ১ ঘন্টাই যথেষ্ট। আপনি যদি সঙ্গে লাগেজ বা বড় ব্যাগ নিয়ে থাকেন জেনে নিন কতটুকু ওজন আপনি নিতে পারবেন। এটি এয়ারলাইন্স ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। ওজন বেশী হলে আপনাকে লাগেজের জন্য ভাড়া দিতে হবে। এয়ারপোর্টের ভেতরেই ভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। আপনি হ্যান্ডব্যাগও নিতে পারবেন সাথে।

৩। চেক ইন
এয়ারপোর্ট টার্মিনালে ঢোকার পর আপনাকে প্রথমেই চেক ইন করতে যেতে হবে। আপনার ফ্লাইট খুলে দেয়ার পরই আপনি এটা করতে পারবেন। টার্মিনালের মনিটর এবং বোর্ডের দিকে খেয়াল রাখুন। আপনাকে আপনার টিকেট, পরিচয়পত্র, ভ্রমণ সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখাতে হবে। এখানে আপনি আপনার লাগেজ জমা দেবেন। চেক ইন অফিসার আপনাকে বোর্ডিং পাস এবং লাগেজের জন্য একটি কার্ড দেবেন।

৪। বোর্ডিং
চেক ইন করার পর আপনাকে যেতে হবে ডিপার্চার লাউঞ্জে। এখানে যাবতীয় সিকিউরিটি চেক করা হবে। আপনাকে আপনার ফোন, জ্যাকেট, ল্যাপটপ বাইরে রেখে যেতে হতে পারে। সবকিছু ঠিক থাকলে সিকিউরিটি অফিসার আপনার হ্যান্ডব্যাগ এবং বোর্ডিং পাসে স্ট্যাম্প দেবেন। আপনি যদি দেশের বাইরে কোথাও যান তাহলে আপনার ইমেগ্রেশন তথ্য চেক করা হবে। আপনাকে সবরকম ডকুমেন্ট দেখাতে হবে এখানে। পাসপোর্ট, ভিসা, ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্য, দাও্য়াতপত্র সব কিছু। কোনকিছু সন্দেহজনক মনে হলে তারা আপনার ফ্লাইট বাতিল করতে পারে। সবকিছু সম্পন্ন হলে আপনাকে প্লেনে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আপনাকে আবারো বোর্ডিং পাস দেখাতে হতে পারে আর হয়ত একটি অংশ কেটে রাখা হবে।

৫। ফ্লাইটের ভেতরে
আপনার সবগুলো ঝামেলার কাজই শেষ। এখন আর কোন চিন্তা নেই। আপনার সীটে বসে পড়ুন। বোর্ডিং পাসে সীট নাম্বার দেয়া থাকে। অনেক ছোট এয়ারলাইন্সে হয়ত সীট নাম্বার নাও দেয়া থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি যেকোন সীটে বসতে পারেন। তবে মহিলা এবং বৃদ্ধদের জন্য সীট আছে কিনা খেয়াল করবেন। সব যাত্রীরা প্রবেশ করলে প্লেনের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্লেন টেক-অফ করার আগে কিছু সতর্কতা মূলক নির্দেশনা দেয়া হবে। দুশ্চিন্তা করবেন না। টেক-অফ করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে, শব্দও বাড়তে পারে। এধরণের শব্দ হয় সীট বেল্ট এলার্ম বা স্মোকিং এলার্ম হিসেবে। সীটবেল্ট সিগন্যাল যখন দেখা যাবে তখন দাঁড়ানো যাবে না। প্লেন যখন একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় উঠে যাবে তখন এই সিগন্যাল বন্ধ করে দেয়া হবে। এরপর আপনি ফ্রেশ হতে উঠতে পারবেন বা খাবার খেতে যেতে পারবেন।

৬। ল্যান্ড করার পর
ল্যান্ড করার সময় আপনি টের পাবেন যে প্লেন নীচের দিকে যাচ্ছে। প্লেনের চাকা রানওয়ে স্পর্শ করলে শব্দ বাড়তে থাকে আর গতি ধীর হতে থাকে। প্লেন আপনাকে টার্মিনালে নামাবে। প্লেন থামার সাথেই দাঁড়িয়ে যাবেন না। আপনাকে সিট বেল্ট খোলার নির্দেশনা দেওয়ার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। টার্মিনালে নামার পর ইমিগ্রেশন অফিসে আপনাকে পাসপোর্ট দেখাতে হবে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে। এরপর আপনার ব্যাগ বুঝে নিন এবং বের হয়ে পড়ুন।

এই পদক্ষেপগুলো মানলেই কোন সমস্যায় পড়বেন না আপনি। আর বিমানে বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়, যা মনোযোগ দিয়ে শুনবেন এবং মেনে চলবেন। এয়ারপোর্টেও যে কোন তথ্যের জন্য তথ্যকেন্দ্র রয়েছে। তারা আপনাকে সহযোগিতা করবেন। সুন্দর এবং ঝামেলামুক্ত হোক আপনার ভ্রমণ।

error: দুঃখিত!