মুন্সিগঞ্জ-বিক্রমপুর হলো ইতিহাসের লীলা ভূমি। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানদের অনেক পবিত্র স্থান রয়েছে মুন্সীগঞ্জ বিক্রমপুরে। কালের বিবর্তনে সে সকল পবিত্র তীর্থ স্থানের নাম মুছে যেতে শুরু করেছে। আমাদের অনেক ইতিহাসই লিপিবদ্ধ হয়নি। কেন লিপিবদ্ধ হয়নি তা আমাদের অজানা।
এ পর্যন্ত বিক্রমপুরের ইতিহাস যারা লিখেছেন তাঁরা কেউই মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুরের পঞ্চতীর্থ স্নান ঘাট নিয়ে লিখেননি।
হিমাংশু মোহন চট্টোপাধ্যায়, যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত, অম্বিকা চরনঘোষ কারো বইয়ে এ পবিত্র স্নান ঘাট গুলোর নাম উল্লেখ করেননি।
অবশ্য এটাও একটি চমৎকার রহস্য। উল্লেখিত লেখকরা সকলেই হিন্দু। কিন্তু হিন্দু তীর্থ স্নান ঘাট নিয়ে কেউ লিখলেন না। যে সময় যে দিন বর্তমানে সোনারগাঁয়ে পুণ্য স্নান ঘাট হয় সে তারিখে মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী, ইছামতি ও ব্রক্ষ্মপূত্রে পূণ্য স্থান হতো। শুধু মাত্র বিভিন্ন লেখক যোগিনী ঘাটের নামোল্লেখ করেছেন। তাও সংক্ষিপ্ত ভাবে।
সে যাই হোক, আমাদের আলোচনার বিষয় গুলো মুন্সীগঞ্জের পঞ্চর্তীথ স্নান ঘাটের পরিচয় উপস্থাপন।
ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে সপ্তম শতক থেকে মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুরে পাঁচের অধিক পূন্যস্থানঘাট বিদ্যমান ছিল। বাংলার চন্দ্রবংশ, চন্দ্রবংশ, পাল ও সেনরাজ বংশের আর্থিক সহযোগিতায় এ স্নান ঘাট গুলো বিভিন্ন সময়ে নির্মিত হয়েছিল। আর স্নান ঘাট উপলক্ষে বসতো বড় ধরনের উৎসব ও মেলা। ঢাকার ইতিহাস গ্রন্থে কয়েকটি ঘাটের নাম যতীন্দ্র মোহন রায় উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া সরেজমিন ধলেশ্বরী ইছামতির তীর পরিভ্রমন করে প্রাচীন পূণ্য স্নান ঘাটের নাম পাই।
এখানে পূণ্যঘাটগুলোর নাম হলো যোগিনীঘাট, ব্রক্ষ্মপূত্রের তীরে, বারুনীঘাট-ধলেশ্বরীর তীরে, শোলপুর-ইছামতির তীরে, কাউয়ামাড়া ও আগলা ধলেশ্বরীর তীরে। আগলা এক সময় বিক্রমপুরে ছিল। বর্তমানে ঢাকার দোহার-নবাবগঞ্জে। যোগিনীঘাট আগলা, শোলপুরে এখন স্নান ঘাট হয় না।
শুধুমাত্র বারুনীঘাট-মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাট সংলগ্ন ও কাউয়ামাড়া-সিরাজদিখান উপজেলায়, এ দু’ঘাটে এখনো চৈত্র সংক্রান্তির দিন পূণ্য স্নান হয়।
মুন্সিগঞ্জের তীর্থ স্নান ঘাট যাত্রীদের দাবী ধলেশ্বরীর তীরে একটি ঘাটস্নান ঘাট নির্মাণের।