১৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | বিকাল ৩:০২
ধর্ষণে জন্ম নেওয়া শিশুটি হবে সম্পত্তির অংশীদার
খবরটি শেয়ার করুন:

ফেনীতে এক দশক আগে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত; ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুকে দেওয়া হয়েছে ধর্ষকের সম্পত্তির উত্তরাধিকার।

ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক অতিরিক্ত দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা বুধবার এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত তৌহিদুল আলম সোহেল সদর উপজেলার শিবপুর গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে। মামলার শুরু থেকেই তিনি পলাতক।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী আসামি সোহেলকে সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর তিন আসামিকে আদালত খালাস দিয়েছে বলে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা লড়া এপিপি ফরিদ আহম্মদ হাজারী জানান।

তিনি বলেন, “ধর্ষণের অভিযোগ এবং এর ফলে শিশুর জন্মের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বর্ণিত বিধি অনুযায়ী শিশুকে আসামির সম্পত্তির ওয়ারিশ ঘোষণা করেছেন।”

এ আইনের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, ট্রাইব্যুনাল অর্থদণ্ড বা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিলে এবং ওই অর্থ তার বিদ্যমান সম্পদ থেকে আদায় করা সম্ভব না হলে ভবিষ্যতে আসামি যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হবেন তা থেকে আদায় করা যাবে এবং সেক্ষেত্রে ওই সম্পদের উপর অন্যান্য দাবির চেয়ে দণ্ড বা ক্ষতিপূরণের দাবি প্রাধান্য পাবে৷

আসামিপক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান। তিনি বলেন, ফেনীর আদালতে ধর্ষণ মামলায় শিশুকে সম্পদের অংশীদার করার রায় এই প্রথম।

গতবছর চট্টগ্রামের আদালতে এক রায়ে এক তরুণীকে ধর্ষণের পর জন্ম নেওয়া শিশুর ভরণপোষণের ভার রাষ্ট্রকে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

মামলার নথির বরাত দিয়ে এপিপি ফরিদ হাজারী জানান, ২০০৬ সালের ২০ অগাস্ট তৌহিদুল আলম সোহেল তার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া ফুফাতো বোনকে ধর্ষণ করে।

ওই ঘটনার পর মেয়েটি সোহেল, তার দুই ভাই ও বোনকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ধর্ষণের ফলে তিনি অন্তঃস্বত্ত্বা হন এবং সন্তানের জন্ম দেন।

ফরিদ জানান, সোহেল পালিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা চলে গেছেন বলে তথ্য পাওয়া যায়। আর মেয়েটি বর্তমানে স্নাতক শ্রেণিতে পড়ছেন। তার শিশুটিকে একটি পরিবারের কাছে দত্তক দেওয়া হয়েছে।

error: দুঃখিত!