মুন্সিগঞ্জ ১১ অক্টোবর, ২০১৯, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি থেকে মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর পর্যন্ত ফােরলেন ফ্লাইওভার ও ফোরলেন সড়ক নির্মাণ কাজ আরও একধাপ এগিয়েছে।
আট কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কে নারায়ণগঞ্জের চরসৈয়দপুরে নির্মিতব্য শীতলক্ষ্যা সেতু পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ ফোরলেন ফ্লাইওভার এবং চরসৈয়দপুর থেকে মু্ক্তারপুর সেতু পর্যন্ত বর্তমান সড়কটি ফোর লেনে উন্নীতকরণ করা হবে।
এ সংক্রান্ত প্রকল্পের নকশা এখন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। চলতি মাসেই সংশ্লিষ্টরা সরেজমিন পরিদর্শন করে নকশা চূড়ান্ত করবেন।
প্রাথমিকভাবে এই পুরো প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫’শ কোটি টাকা। একনেকের সভায় অনুমোদনের পর টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে কাজ দৃশ্যমান করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সেতু ভবনে এক সভা শেষে এসব তথ্য সাংবাদিকদের জানান মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস।
এসময় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম, সেতু বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মোঃ ফেরদৌস, মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ জসিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এই প্রকল্পের ব্যাপারে সরকারের আগ্রহ রয়েছে। তাই খুব দ্রুতই এটি বাস্তবায়ন পর্যায়ে যাবে।
সেতু বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মোঃ ফেরদৌস জানান, নকশা নিয়ে দুই জেলার সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকদের সাথে সভা হয়েছে। প্রকল্প সম্পর্কে তাদের ধারণা দেয়া হয়েছে। তবে উপস্থাপিত নকশায় চরসৈয়দপুর এলাকায় যেখানে পঞ্চবটি থেকে ফ্লাইওভার এসে সড়কের সাথে মিশে যাবে সেখানটায় সামান্য জটিলতা দেখা দিয়েছে। তাই এই মাসের মধ্যে সেখানে সেতুমন্ত্রী, সেতু সচিব ও দুই জেলার সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস ও শামীম ওসমান সরেজমিন পরিদর্শন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। এরপর নকশা অনুমোদন শেষে সরকারী সকল দাপ্তরিক কাজ শেষে দরপত্র আহবান করা হবে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সিগঞ্জ সদর-গজারিয়া (৩) আসনের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস ‘আমার বিক্রমপুর’ কে বলেন, ‘মুন্সিগঞ্জবাসীর একটা দীর্ঘ দিনের আক্ষেপ ছিলো এই সড়কটি নিয়ে। বিশেষ করে যারা নিয়মিত ঢাকায় আসা-যাওয়া করে তাদের দুর্ভোগটা আমি একান্তভাবে অনুভব করি। কারন আমিও এই পথে প্রতি সপ্তাহে ৩-৪ বার যাতায়াত করি। তাই আমি মহান জাতীয় সংসদে আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে আমার মুন্সিগঞ্জবাসীর প্রধান সমস্যা হিসেবে চিন্থিত করে মুক্তারপুর থেকে ঢাকা যাতায়াতের এই সড়কটির বেহাল দশাকে দূর করতে ফ্লাইওভারের দাবি জানাই। প্রধানমন্ত্রী সেই দাবির প্ররিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নিদের্শ দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সড়কপথে ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জের দূরত্ব মাত্র প্রায় ২৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার তেমন কোন ঝামেলা ছাড়াই পার হওয়া যায়। কিন্তু এরপরই শুরু হয় মানুষের দুর্ভোগ। পঞ্চবটি থেকে মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত মাত্র আট কিলোমিটার পার হতে কখনো কখনো ২ ঘন্টাও লেগে যায়। এরমধ্যে এই সরু সড়কে সিমেন্ট ফ্যাক্টরির গাড়ি ঢুকে দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দেয়। মুন্সিগঞ্জের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো ঢাকার সাথে অল্পসময়ে ভোগান্তি ছাড়াই যোগাযোগ। দীর্ঘদিনের সেই দাবি আর ভোগান্তি দূর হওয়ার পথে।’