১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | সকাল ১০:৩৭
গৃহবধূ আখির আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন, মামলা উঠিয়ে নিতে হুমকি
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ২৩ জানুয়ারি, ২০২০, জসীম উদ্দীন দেওয়ান (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকদের দ্বারা নির্যাতিত গৃহবধূর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে।

উন্নত চিকিৎসা গ্রহনে সামর্থ্যও নেই পরিবারটির। মেয়েটিকে বাঁচাতে বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহবান স্বজন ও সুধি সমাজের।

অন্য দিকে মামলা উঠাতে স্বামী হৃদয় ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ উঠেছে।

গ্রেফতারকৃত দুজন আসামীর তিন দিন ও এক দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত, বাকি দুজন আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার।

প্রেম করে গত বছর নয় জানুয়ারী বিয়ের পর থেকে কলেজ ছাত্রী আঁখিকে হারপিক ও ফিনাইল খায়ানোসহ নানাভাবে নির্যাতন করার পর ঢাকা মেডিকেলে পাকস্থলির অপারেশন করা হয় চলতি মাসের আট তারিখে। এর পর ১৮ জানুয়ারী শনিবার থেকে আঁখিকে জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি ও ‘আমার বিক্রমপুর’ এর নির্বাহী সম্পাদক মনিরুজ্জামান রিপনসহ কয়েকজন মিলে মুন্সিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করান।

নির্যাতিত আঁখির প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেই বলে জানান দায়িত্বরত চিকিৎসক সিনিয়ার কনসালটেন্ট সার্জন ডা: মো: গোলাম মহিউদ্দীন।

তিনি জানান, আট জানুয়ারী ঢাকা মেডিকেলে আঁখির পাকস্থলির অপারেশন করা হয়, ১৫ দিন পার হলেও সেই অপারেশনের সেলাই কাটা সম্ভব হয়ে উঠেনি। যে ষ্ট্যাপলার ডিভাইজ দিয়ে সেলাই করা হয়েছে, সেলাই কাটার সে ডিভাইজ মুন্সিগঞ্জ হাসপাতালে নেই। এখানে সেলাই কাটা হলে খুব বেশি ঝু্কি থেকে যায়। এছাড়া আঁখির অপারেশনের জায়গায় ইনফেকশন হয়ে গেছে। এই মুহুর্তে ওকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ রয়েছে ডা: মহিউদ্দীনের।

দরিদ্র এই পরিবারের পক্ষে ঢাকা নিয়ে মেয়েটির চিকিৎসা সেবা দেয়া আর সম্ভব নয়। তাই বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে পরিবার। সেই সাথে মহিলা পরিষদের সভাপতি অ্যাড. নাছিমা আক্তার এবং স্থানীয় বাসিন্দারা।

মঙ্গলবার দুপুরে গুরুতর অসুস্থ্য আঁখির জবান বন্দি নিতে হাসপাতালে আসেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মুক্তা মন্ডল।

অন্য দিকে মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি করে নিজের ফেজবুকে ষ্ট্যাটাস দেওয়ায় বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন বলে জানান, জেলা সেচ্ছাসেবক লীগ জৈষ্ট সহ সভাপতি মনিরুজ্জামান রিপন। আর মামলা তুলে নিতে হৃদয় এবং ওর পরিবারের সদস্যদের হুমকি খেতে হচ্ছে বলে জানান আঁখির পরিবারের লোকেরা।

পুলিশের সাত দিনের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে, বুধবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত আঁখির শ্বশুড় রুহুল আমিনকে একদিনের ও দেবর রিফাতকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।

আর বাকি দুই আসামীদের ধরার চেষ্টার কথা জানান, পুলিশ সুপার, আব্দুল মোমেন পিপিএম।

২০১৯ সালে ৯ জানুয়ারী রামপাল ইউনিয়নের দরিদ্র পরিবারের কলেজ পড়ুয়া আঁখিকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন একই ইউনিয়নের রুহুল আমিনের ছেলে রফিকুল ইসলাম হৃদয়। এর তিন মাস পর থেকে আঁখির উপর চলে পৈশাচিক আচরণ। সারাদেহে অত্যাচারের ক্ষত বহন করে মুন্সিগঞ্জ হাসপাতালের বিছানায় লড়াই করছে মৃত্যুর সাথে।

error: দুঃখিত!