৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | সকাল ৯:১২
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের পাশে দাড়াতে প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর প্রতি আহবান মৃণাল কান্তি দাসের
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ডেস্ক রিপোর্ট (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এক বিবৃতিতে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের সর্বোচ্চ আলু উৎপাদনকারী জেলা মুন্সিগঞ্জের বিস্তৃণ এলাকার আলু ক্ষেত ও শীতকালীন সবজিসহ অন্যান্য রবিশস্য প্লাবিত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সহায়তা এবং নতুন করে আলু বীজ বপনের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্রদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এমপি এবং কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপিসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এক বিবৃতিতে অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, প্রমত্তা পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতি বিধৌত মুন্সিগঞ্জ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় দেশের সব থেকে বেশি আলু উৎপাদিত প্রায়। প্রতি বছর এ জেলার প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আলু চাষ করা হয়। এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তিই হলো আলু চাষ।

গত মৌসুমেও এ জেলায় প্রায় ১৩ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়। তবে গত দুই মৌসুম আলু’র দাম কম থাকায় এ এলাকার আলু চাষীদেরকে ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয়েছে। তদুপরিও এ বছর প্রায় ৩৭ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় এবং গত দুই বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ইতোমধ্যে কৃষক ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু বপন করেছে। কিন্তু আলুর ভরা মৌসুমে আকস্মিক বৃষ্টিপাতের কারণে মারাত্মক বিপর্যয়ের সস্মুখিন হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের কৃষক। মুন্সিগঞ্জের বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হচ্ছে কৃষকের করুণ আর্তনাদ, বাতাসে অনুরণিত হচ্ছে নিরব কান্না।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে সৃষ্ট নিম্নচাপে গেলা কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে এ জেলার ১৭ হাজার হেক্টর জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৩ হাজার হেক্টর জমির আলু বীজ বিনষ্ট হয়ে গেছে। কৃষি বিভাগের মতে- যা রিকভার করা সম্ভব নয়। নষ্ট হয়ে যাওয়া এসব জমিতে নতুন করে আলু বপন করতে প্রায় ২৭ হাজার টন বীজ প্রয়োজন। কিন্তু এ অঞ্চলের হিমাগারে সে পরিমাণ মানসম্মত আলু বীজ নেই। সে কারণে কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি অধিদপ্তর, বিএডিসিসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে আলু বীজের ব্যবস্থা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

একই সাথে হিমাগারে যতটুকু আলু বীজ রয়েছে, সঙ্কটকে কাজে লাগিয়ে কোনো অসৎ ব্যবসায়ী যেন অতিরিক্ত মুনাফা লুটতে না পারে সে ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সরকারের মাননীয় কৃষি মন্ত্রী মহোদয়ের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি- দেশের আলু উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু মুন্সিগঞ্জের আলু চাষীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করুন।

বিনামূল্যে আলু বীজ প্রদানসহ ক্ষতি পুষিয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান করুন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা নতুন করে আলু বপন করতে সক্ষম না হলে দেশে আলুর ঘাটতি দেখা দেবে এবং মূল্যও অনেক বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাবো মুন্সিগঞ্জের খালগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। অপরিকল্পতি ড্রেজিং, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং অবৈধ দখলের ফলে মুন্সিগঞ্জ জেলার খালসমূহ নাব্যতা হারিয়েছে। ফসলি জমি থেকে বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে না যাওয়ার প্রধান কারণ হলো খাল-বিলের নাব্যতা হ্রাস। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।

error: দুঃখিত!