মুন্সিগঞ্জ, ১২ মার্চ, ২০২০, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধন করেছেন প্রধামনন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বহুল প্রতীক্ষিত এক্সপ্রেসওয়েটির উদ্বোধন করেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হলো এক্সপ্রেসওয়েটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। শুধু সড়ক নয়, নৌ, বিমান ও রেল পথেরও আমরা উন্নয়ন করছি। সারাদেশের মানুষ আজ সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। আজ যে প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করা হলো তা মুজিববর্ষের উপহার।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষগুলো এতদিন অবহেলার মধ্যে ছিল। ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জ যেতে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগত। এ ছাড়া বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন উন্নয়ন ছিল না। আজ সে যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, এসব এলাকায় এখন দ্রুত উন্নয়ন হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন, এই পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংক আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিল। আমি সেটা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। কানাডার কোর্টে প্রমাণ হয়, সেখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার পর দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছি। ঢাকা থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত যাতে নিরবিচ্ছন্নভাবে মানুষ চলাচল করতে পারে, সে জন্য সড়ক, ব্রিজ, কালভাট, আন্ডারপাস, ওভারপাস নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে। এ ধরনের যোগযোগ ব্যবস্থার ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ উপকৃত হচ্ছে। আমরা যোগযোগ ব্যবস্থার আধুনিক ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন করতে চাই। সারাদেশ এখন সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে।’
প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, ‘আন্তর্জাতিক মানের এই এক্সপ্রেসওয়ে দুইটি সার্ভিস লেনের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীকে যুক্ত করবে। এটি উন্মুক্তের ফলে বাংলাদেশ যোগাযোগ ক্ষেত্রে এক নতুন যুগে প্রবেশ করল। এখন মাত্র ২৭ মিনিটে ঢাকা থেকে মাওয়ায় যাওয়া যাবে।’
১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই এক্সপ্রেসওয়েতে ক্রসিং এড়িয়ে নিরবচ্ছিন্ন চলাচল নিশ্চিত করতে ৪৪টি কালভার্ট, ১৯টি আন্ডারপাস, চারটি বড় সেতু, ২৫টি ছোট সেতু, পাঁচটি ফ্লাইওভার, দুটি ইন্টার চেইন, চারটি রেলওয়ে ওভারপাস রয়েছে।
সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড।
৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশ ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার, আর পদ্মা সেতুর অন্য পাড়ে পাঁচ্চর থেকে ভাঙ্গা-পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বাসিন্দাদের ঢাকা যাতায়াত সুগম হবে।
বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা, খুলনা বিভাগের ১০টি জেলা এবং ঢাকা বিভাগের ছয় জেলাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২২টি জেলার মানুষ সরাসরি এই এক্সপ্রেসওয়েতে উপকৃত হবেন বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য।