১৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | বিকাল ৩:২২
‘আমার বিক্রমপুর’ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ১৬ মে ২০২৫, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

‘আমার বিক্রমপুর’ অনলাইন পত্রিকা বন্ধ এবং এর সম্পাদক শিহাব আহমেদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন অর্ধশতাধিক বিক্ষুব্ধ মানুষ।

গত ১০ মে “মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটে নারী যাত্রীকে মারধর-শ্লীলতাহানি, টাকা-মোবাইল লুট!” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাংবাদিকতার নৈতিকতার বাইরে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সকল সাংবাদিককে দ্রুত অপসারণ করে প্রেসক্লাবের সংস্কার করতে হবে।

আজ দুপুর সাড়ে ৩টায় মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ‘মুন্সিগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে এসব দাবি জানান অংশগ্রহণকারীরা।

গত ৯ মে মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটে যাত্রাবিরতির জন্য থামা একটি লঞ্চে দুই তরুণীকে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনায় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এই ঘটনার একটি সংবাদ প্রকাশ করেছিল স্থানীয় অনলাইন পত্রিকা আমার বিক্রমপুর। গত ১১ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় যৌন নিপীড়ন, বেআইনি জনতা জমায়েত, অনধিকার প্রবেশ, মারধর, ভাঙচুর, ক্ষতি ও হুমকির অভিযোগ এনে নৌ পুলিশ মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় মামলা করে। এই মামলায় ১০ মে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার যোগনীঘাট এলাকার বাসিন্দা নেহাল আহমেদ জিহাদকে (২৪) প্রধান আসামি করা হয়, এবং পরে ১২ মে তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

মানববন্ধন চলাকালীন সময় নেহালের পরিবারের কাউকে উপস্থিত থাকতে ও বক্তব্য রাখতে দেখা যায়নি।

মানববন্ধনকারীরা বলেন, ‘মিথ্যা সংবাদ প্রচার, হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড, অবৈধ গ্রেফতার এবং হলুদ সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’ তারা আরও বলেন, ‘সাংবাদিক শিহাব আহমেদকে প্রেসক্লাব থেকে অপসারণ করতে হবে এবং ‘আমার বিক্রমপুর’ পত্রিকা বন্ধ করে দিতে হবে।’

মানববন্ধনের ব্যানারে দীপ্ত টেলিভিশনের মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি কায়সার সামিরের ছবি ব্যবহার করা হয়।

‘আমার বিক্রমপুর’ পত্রিকার নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ‘যদি প্রশাসন এই দাবি না মানে, আমরা তাদের বিরুদ্ধেও আন্দোলনে নামব। প্রশাসন যদি ‘আমার বিক্রমপুর’ কিংবা হলুদ সাংবাদিকতাকে সমর্থন করে, তবে আমরা মনে করব প্রশাসনও তাদের দালাল।’

এদিকে, উল্লিখিত সংবাদ প্রকাশের জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে চার যুবক গত ১০ মে বিকেলে মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবে প্রবেশ করে সাংবাদিক শিহাব আহমেদসহ অন্য সাংবাদিকদের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেন এবং পরে সন্ধ্যায় মুচলেকা নিয়ে পরিবারের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া একজন শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ আহসান আকাশ বলেন, ‘আমরা আশা করি, আইন সবার জন্য সমান। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, পুলিশ প্রশাসন আমাদের দাবি মেনে নেবে।’

মুন্সিগঞ্জভিত্তিক ‘আমার বিক্রমপুর’ অনলাইন পত্রিকাটি ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করে। ২০২২ সালে পত্রিকাটি অনলাইন নিবন্ধনের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে।

লঞ্চে দুই নারীকে মারধরের ঘটনায় করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৯ মে জনসম্মুখে তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধর করা হয়। এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। এজাহারে আরও বলা হয়, ‘জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে জানা যায়, মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটে নোঙর করা একটি লঞ্চে কিছু দুষ্কৃতকারী প্রবেশ করে সাধারণ যাত্রীদের হয়রানি, মারধর, ভাঙচুর ও চুরি করছে।’

এ ঘটনায় অভিযুক্ত নেহাল আহমেদ গণমাধ্যমকে আটকের পূর্বে বলেন, ‘বড় ভাই হিসেবে আমি সেখানে শাসন করি। এর বেশি কিছু নয়। তারপরও আমি যেটি করেছি এটি ভুল করেছি, আমি এর জন্য অনুতপ্ত।’