মুন্সিগঞ্জ, ১৫ জুন, ২০২০, শেখ রাসেল ফখরুদ্দিন (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলার যশলং ইউনিয়নের হাটকান গ্রামের স্বামীর লাথিতে গৃহবধূ তানিয়া আক্তার (২৮) নামক এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর গর্ভের আনুমানিক চার মাসের বাচ্চার হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক মধ্যস্থতায় ইসলামী শরিয়া মোতাবেক উপজেলার হাটকান গ্রামের বিল্লাল হোসেন বেপারীর কন্যা তানিয়া আক্তারের সাথে একই গ্রামের হাজী সিদ্দীক আলী মাদবরের পুত্র আজিজুর রহমানের বিয়ে হয়।
বিয়ের পরেই তানিয়ার স্বামী আজিজুর রহমান ও শ্বশুড় হাজী সিদ্দীক বেপারী যৌতুকের জন্য বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
স্বামী ও শ্বশুড়ের প্রতিনিয়ত যৌতুকের জন্য নির্যাতন সইতে না পেরে গৃহবধূ তানিয়া তার পিতা-মাতাকে বিষয়টি জানায়। মেয়ের সুখের জন্য তানিয়ার পিতা তানিয়া স্বামী ও শ্বশুড়ের চাহিদা মোতাবেক ৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও চার লক্ষ টাকার ফার্নিচার প্রদান করে। এগুলো দেওয়ার পর কিছু কিছুদিন সুখেই ছিলো তানিয়া। এরপর আবার শুরু হয় যৌতুকের চাপ। তারপর বাধ্য হয়ে মেয়ের সুখের আশায় তানিয়ার পিতা তানিয়ার স্বামীকে একটি ফ্রিজ কিনে দেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে কলহের কারনে একাধিকার যশলং ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাহাঙ্গীর সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সামাজিকভাবে মিল-মিমাংশা করে দেন। এতেও দমে যাননি যৌতুক লোভী তানিয়ার স্বামী ও শ্বশুড়।
এর ধারাবাহিতায় গত ২৮/০৫/২০২০ ইংরেজি বিকেলে তানিয়ার স্বামী আজিজুর ও শ্বশুড় হাজী সিদ্দীক বেপারী তানিয়াকে পুনরায় চার লক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দেয়।
গৃহবধূ তানিয়ার পিতার বাড়ী থেকে যৌতুকের টাকা না আনার অপারগতা প্রকাশ করলে প্রাষন্ড স্বামী তানিয়ার পেটে লাথি, কিল ঘুষি মেরে নীলা ফুলা জখম করে।
স্বামীর মার খেয়ে মারাত্মক আহত তানিয়া তার ভাই মিঠুনকে ফোনে বিষয়টি জানালে মিঠুন তাকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জের রিকাবী বাজারের ফাতেমা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। গতকাল রবিবার তানিয়ার রক্তপাত শুরু হলে মুন্সিগঞ্জের সিপাহীপাড়া এলাকায় একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা পরিক্ষা নিরিক্ষা (আল্টাস্নোগ্রাম) করে দেখতে পারেন যে তানিয়ার গর্ভেই সন্তান মারা গেছে।
এই ঘটনার বিচার চেয়ে গৃহবধূ তানিয়া সোমবার বিকালে টংগিবাড়ী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে টংগিবাড়ী থানার ওসি হারুন অর রশিদ জানান, অভিযোগ পেয়েছি ঘটনাস্থলে আজ সোমবার বিকালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।