মুন্সিগঞ্জ, ২৯ নভেম্বর, ২০২২, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে গতকাল। এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ৫৮তম দিনে ফল প্রকাশ করা হলো।
মুন্সিগঞ্জ জেলায় এবার সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৮৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮২১ জন শিক্ষার্থী। জেলায় সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৫৪৯১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ২০৭৮জন।
অন্যদিকে, কারিগরী শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৯৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫২ জন শিক্ষার্থী। জেলায় কারিগরী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৬৩৭ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ৩০জন। এবং
এবছর মুন্সিগঞ্জে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৮২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৪ জন শিক্ষার্থী। জেলায় মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১২৭০ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ২১৮জন।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো. বেনজীর আহম্মদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এসএসসির ফলাফল নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আরও যতটুকু ভালো ফলাফল করতে পারতাম কিন্তু করোনার কারনে সেটা হয়নি। তবে একেবারে হতাশ হবার মত ফলাফল হয়নি। ভালো ফলাফল হয়েছে, তবে আরও ভালো হওয়ার দরকার।
সাধারণ বোর্ডে এগিয়ে লৌহজং, জিপিএ-৫ বেশি সদরে
সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি পরীক্ষায় ৬ উপজেলার মধ্যে মুন্সিগঞ্জ জেলায় ভালো ফলাফল করেছে লৌহজং উপজেলা। এখানে পাসের হার ৯০ দশমিক ৫২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮১ জন শিক্ষার্থী। এই উপজেলা থেকে এবছর ১৫৫৫ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ১৫৪জন।
অন্যদিকে মুন্সিগঞ্জ সদরে পাসের হার ৮৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৭০ জন শিক্ষার্থী। এই উপজেলা থেকে এবছর ৪১৭৬ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ৬১২ জন শিক্ষার্থী। গজারিয়ায় পাসের হার ৮৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১৭ জন শিক্ষার্থী। এই উপজেলা থেকে এবছর ১৮টি প্রতিষ্ঠান থেকে ২৩১৭ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ৩৬৭ জন শিক্ষার্থী। টংগিবাড়ীতে পাসের হার ৮৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮৭ জন শিক্ষার্থী। এই উপজেলা থেকে এবছর ১৮১৮ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ২০০ জন শিক্ষার্থী। সিরাজদিখান উপজেলায় পাসের হার ৮৮ দশমিক ২৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪৩ জন শিক্ষার্থী। এই উপজেলা থেকে এবছর ২৭৬৬ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ৩২১ জন শিক্ষার্থী। শ্রীনগর উপজেলায় পাসের হার ৮৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২৩ জন শিক্ষার্থী। এই উপজেলা থেকে এবছর ২৮৫৯ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ৪২৪ জন শিক্ষার্থী।
কারিগরি বোর্ডে গজারিয়া এগিয়ে
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি পরীক্ষায় ৬ উপজেলার মধ্যে মুন্সিগঞ্জ জেলায় ভালো ফলাফল করেছে গজারিয়া উপজেলা। এখানে পাসের হার শতভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন শিক্ষার্থী।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাকির হোসেন জানান, উপজেলার হোসেন্দি বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু অংশ কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এই ফলাফল করেছে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি পরীক্ষায় মুন্সিগঞ্জ সদরে পাসের হার ৯২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন শিক্ষার্থী। এই উপজেলা থেকে এবছর ২১৮ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ১৬ জন শিক্ষার্থী। টংগিবাড়ীতে পাসের হার ৯৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ জন শিক্ষার্থী। এই উপজেলা থেকে এবছর ১৯২ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ৬ জন শিক্ষার্থী। লৌহজং উপজেলায় পাসের হার ৯৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩২ জন শিক্ষার্থী। এই উপজেলা থেকে এবছর ১৫০ জন শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ৭ জন শিক্ষার্থী। সিরাজদিখান উপজেলা থেকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কোন প্রতিষ্ঠান এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি। শ্রীনগর উপজেলায় পাসের হার ৯৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এখানে কোন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করেনি। এই উপজেলা থেকে এবছর ৩১ জন শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ১ জন শিক্ষার্থী।
মাদ্রাসা বোর্ডেও গজারিয়ার চমক
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি পরীক্ষায় ৬ উপজেলার মধ্যে মুন্সিগঞ্জ জেলায় ভালো ফলাফল করেছে গজারিয়া উপজেলা। এখানে পাসের হার ৯১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ জন শিক্ষার্থী।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাকির হোসেন জানান, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে উপজেলার ৫টি প্রতিষ্ঠান থেকে ২০৯ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ১৭জন।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি পরীক্ষায় মুন্সিগঞ্জ সদরে পাসের হার ৮৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ জন শিক্ষার্থী। এই উপজেলা থেকে এবছর ২৮৯ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ৪২ জন শিক্ষার্থী। টংগিবাড়ীতে পাসের হার ৮২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। তবে কেউ জিপিএ-৫ অর্জন করেনি। এই উপজেলা থেকে এবছর ১৫২ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ২৭ জন শিক্ষার্থী। লৌহজং উপজেলায় পাসের হার ৮১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন শিক্ষার্থী। এই উপজেলা থেকে এবছর ১৮৭ জন শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ৪০ জন শিক্ষার্থী। সিরাজদিখান উপজেলায় পাসের হার ৭৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ জন শিক্ষার্থী। এই উপজেলা থেকে এবছর ২৫৪ জন শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ৫১ জন শিক্ষার্থী। শ্রীনগর উপজেলায় পাসের হার ৭৭ দশমিক ০৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন শিক্ষার্থী। এই উপজেলা থেকে এবছর ১৭৯ জন শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ৪১ জন শিক্ষার্থী।