মুন্সিগঞ্জ, ১০ জুন, ২০২০, টংগিবাড়ী প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
নিজের ক্লিনিকে ঘটা বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে প্রশ্ন করায় ‘টংগিবাড়ীর সবাই মুর্খ’ বলে কটাক্ষ করেছেন স্থানীয় সেবা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারের মালিক কাকলী ইসলাম।
এর আগে, সেকমোকে ডাক্তার বানিয়ে রোগী দেখানোর অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ৫০হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছিলো টংগিবাড়ীতে অবস্থিত সেবা ক্লিনিককে।
এবার একই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সরকারি ডিউটিকালীন সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে দিয়ে সিজার করানো নিয়ে।
এমনকি কিছুদিন পূর্বে করোনা পজেটিভ হওয়ার পর পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই তাকে দিয়ে সিজার করানো হয় বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
তবে ডা. তাসলিমা আক্তারের দাবী, হোম কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার ২দিন আগে ও ১৪দিন শেষ হওয়ার একদিন পর সিজার করেছেন তিনি।
আর ক্লিনিক কতৃপক্ষের দাবি, কোয়ারেন্টিন শেষ করার ৩দিন পর সিজারে অংশ নেয় সে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিনে ক্লিনিক কতৃপক্ষের বক্তব্য জানতে গেলে টংগিবাড়ী উপজেলার সবাইকে মুর্খ বলে কটাক্ষ করেন ক্লিনিকটির মালিক কাকলী ইসলাম (তার সেই বক্তব্যের একটি অডিও রেকর্ড সাংবাদিকদের হাতে রয়েছে)।
জানা গেছে, গত ১৩ই মে করোনা পজেটিভ আসে টংগিবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তারের। এরপর ১৪দিন অর্থাৎ ২৭ই মে পর্যন্ত হোম আইসোলেশনে ছিলেন এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। কিন্তু ১৫তম দিনেই সেবা ক্লিনিকে আরো একটি সিজারে অংশ নেয় সে।
ডিউটিকালীন সময় ও করোনা সংকটের সময়ও বেসরকারী ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চালেই টংগিবাড়ী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার বলেন, এসব বিষয় নিয়েতো অনেক আগেও একবার হয়েছে, আবার একই জিনিস আপনারা বারবার কেন?করোনা আক্রান্ত হয়ে নয় ১৪দিন শেষ হওয়ার একদিন পর সিজারে অংশ নিয়েছি।
এরপর আপনারা সরাসরি এসে আমার সাথে কথা বলেন বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ক্লিনিকটির মালিক কাকলী আক্তার সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে সিজারের রেজিস্ট্রে খাতা দেখাবে না বলে লুকিয়ে রাখে।
সাংবাদিকরা ক্লিনিকে প্রবেশ করতে পারবে না বলে মামলা করারও হুমকি প্রদান করেন তিনি।
কাকলী আক্তার বলেন, আমি এই ক্লিনিকের মালিক, মুর্খ এলাকায় আমরা ক্লিনিক চালাই, টংগিবাড়ীর মানুষ হচ্ছে মূর্খ, এছাড়াও সাংবাদিকরা বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে তাদের নানা ভাবে কটাক্ষ করেন তিনি।
একইসময় মালিক পক্ষের আরেকজন ডাক্তার বুলবুল সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
ডা. বুলবুল বলেন, যারা অসচেতন তাদেরকে যদি তিনি (কাকলী) মুর্খ বলে থাকেন তবে ঠিক করেছেন।
এসব বিষয়ে টংগিবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা আক্তার জানান, এর আগে সেকমোকে ডাক্তার বানিয়ে রোগী দেখানোর অভিযোগ ক্লিনিকটিকে ৫০হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিলো।
বেসরকারি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সিজারের বিযয়ে জানতে চাইলে মুন্সিগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা: আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ডিউটিকালীন সময় বাইরে কেউ কাজ করতে পারবে না। আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম, তবে খোঁজ নিয়ে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।