মুন্সিগঞ্জ, ৫ আগস্ট ২০২৪, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
সোমবার দুপুর ৩ টা। মুন্সিগঞ্জ শহরের সুপারমার্কেটে সুনসান নিরবতা। এর ঠিক ১০ মিনিট পরই যখন বিভিন্ন গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশছাড়ার খবর আসতে শুরু করলো এরপর আর ঠেকানো যায়নি জনস্রোত।
শহরের আশপাশের এলাকাগুলো থেকে কয়েক হাজার লোক মিছিল নিয়ে উল্লাস করতে করতে আসতে থাকেন সুপারমার্কেট চত্বরে। গতকালেই যেখানে আন্দোলনকারীদের দমাতে টানা ৮ ঘন্টা শক্তিপ্রয়োগ করতে হয়েছে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ ও পুলিশের। গুলি-ককটেল খরচ হয়েছে কয়েক শত।
এই রিপোর্ট লেখার সময় রাত ৮ টা পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অবস্থানে মুখর ছিলো সুপারমার্কেটের অঙ্কুরিত যুদ্ধ ১৯৭১ ভাস্কর্য। আশপাশে-উপরে দাড়িয়ে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে সেখানে আনন্দ-উল্লাস করছিলেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশা বয়সের শত শত মানুষ।
গতকালকের ঘটনায় প্রাণ যাওয়া ৩ জনের নাম-পরিচয় মিলেছে এখন পর্যন্ত। অসমর্থিত সূত্র বলছে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি।
সরকারি হিসাব মতে- গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন ১১৫ জন। এর মধ্যে উভয়পক্ষের ২৫ জনের অবস্থা গুরুতর। তবে, এই হিসাবের বাইরেও বড় একটি সংখ্যা রয়েছে। যারা আক্রমণের ভয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাননি।
রোববার (৪ আগস্ট) গুলিবিদ্ধ গুরুতর আহত কয়েকজনকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক। আহতদের নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সেটি থামিয়ে আহতদের নামিয়ে লাঠিসোটা দিয়ে পেটাতে শুরু করেন কয়েকজন। এরই মধ্যে ছিনিয়ে নেয়া হয় সাথে থাকা মোবাইল ফোন, টাকা।
এদিকে আজ সোমবার দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মুন্সিগঞ্জ পৌরসভা, মুন্সিগঞ্জ সদর থানা, ট্রাফিক কার্যালয়, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও তার পুত্র দ্বাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লবের বাসভবন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুবৃত্তরা। এছাড়া জেলার বিভিন্ন জায়গায় একাধিক ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। জেলা কারাগারে বিক্ষুব্ধ জনতা জড়ো হলে সেখানে নিরাপত্তার কাজ করেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।